কোচবিহার: বর্ষার মরশুম আসতেই জেলায় মাছ ধরতে হিড়িক দেখা যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন গ্রাম্য এলাকা গুলিতে। আজও জেলার বিভিন্ন গ্রাম্য এলাকা গুলিকে মাছ ধরতে ব্যবহার হয় বিশেষ এক উপকরণ। স্থানীয় ভাষায় এই উপকরণের নাম “ট্যাপাই”। নামটা একটু অদ্ভুত রকমের, তবে এই উপকরণটির কাজ দেখলে যে কেউ আরও অনেকটাই অবাক হবে যে কেউ। এই সম্পূর্ণ জিনিসটি তৈরি করা হয় বাঁশের মাধ্যমে। বাঁশের রকমারি মাপের কাঠি ও সুতো দিয়ে বানানো হয় এটি। তারপর মাছ ধরার জন্য ব্যবহার করা হলে মাছ ভিতরে ঢুকে আর বেরতে পারে না।
ট্যাপাই প্রস্তুতকারী আরতি মোদক জানান, “এই ট্যাপাই তৈরি করতে সমগ্র লাগে অনেকটাই। তবে তার চাইতে বেশি বেশি অসুবিধার বিষয় হল সারাদিনে একটির বেশি ট্যাপাই বানানো যায় না। তাই এই জিনিস বিক্রি করে মুনাফার পরিমান হয় অনেকটাই কম। মূলত এই কারণে আগে এই জিনিসের দারুণ প্রচলণ থাকলেও, বর্তমান সময়ে খুব একটা বেশি চোখে পড়ে না এই জিনিস। যদিও গ্রাম বাংলার বিভিন্ন এলাকায় এখনও এই জিনিস তৈরি হয়। এছাড়া গ্রাম বাংলার মানুষ মাছ ধরতে এখনও এই উপকরণ ব্যবহার করে থাকে।”
এছাড়া ট্যাপাই প্রস্তুতকারী আরেক ব্যক্তি রামকান্ত মোদক জানান, “আগে এই জিনিসের প্রচলণ বেশি থাকায় বেশি মুনাফা পাওয়া যেত। তবে এখন এই জিনিসের প্রচলন কমে যাওয়ার কারণে বিক্রি করে সঠিক মুনাফা অর্জন হয় না। ফলে ট্যাপাই প্রস্তুতকারীরা অনেকেই এই পেশা বদলে নিয়েছেন।” ট্যাপাই বিক্রেতা সুজন ভাট জানান, “এক একটি ট্যাপাই বিক্রি করে মোট লাভ থাকে ১৫ শতাংশ। ফলে বিক্রি করে লাভ থাকলেও বিক্রি কমেছে আগের তুলনায়। তবে বর্ষার সময় এই জিনিসের চাহিদা বেড়ে ওঠে অনেকটাই।”
তবে উত্তরবঙ্গের লোক সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই উপকরণ। তাইতো জেলায় এই উপকরণ এখন চোখে খুব একটা না পড়লেও সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়নি। এখনও কিছু মানুষ পেশার তাগিদে কিংবা নেশার বসেই এই উপকরণ ব্যবহার করছেন। তাইতো বর্ষার সময় আসলেই এই জিনিসের চাহিদা বেড়ে ওঠে কয়েকগুণ। তখন চাহিদা অনুযায়ী যোগান দিতে পারেন না প্রস্তুতকারীরা।
Sarthak Pandit