আলিপুরদুয়ার: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে সাগা দাবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। বুদ্ধ পূর্ণিমার পর থেকে এই উৎসব শুরু হয়, চলে এক মাস ধরে। এই মুহূর্তে প্রতিটি গুম্ফাতে চলছে এই উৎসব।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অতি পবিত্র দিন হল বুদ্ধ পূর্ণিমা। কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এক বুদ্ধ পূর্ণিমাতেই নেপালের কপিলাবস্তু নগরীতে জন্ম নিয়েছিলেন গৌতম বুদ্ধ। অবশ্য বুদ্ধ পূর্ণিমা শুধুমাত্র বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে দিনটি উদযাপন করেন। সেই বুদ্ধ পূর্ণিমার পর একমাস ধরে চলে সাগা দাবা উৎসব। বৌদ্ধ ধর্মের মানুষ অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে এই উৎসব পালন করেন।
আরও পড়ুন: বিপথগামী শৈশবকে মূল স্রোতে ফেরাবে বেসরকারি হোম
তিব্বতি ভাষায় সাগা শব্দের অর্থ তারা ও দাবা শব্দের অর্থ উৎসব। এই ‘সাগা দাবা’ কথাটি একটি তিব্বতি শব্দ। গৌতম বুদ্ধ তাঁদের জীবনে উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর ধ্যান-জ্ঞান’ই একমাত্র লক্ষ্য, এই উৎসবের মধ্য দিয়ে সেটাই বোঝানো হয়। এই একমাস সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিটি গুম্ফাতে পুজো হয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মানুষেরা পড়েন ধর্মীয় গ্রন্থ। মালা জপ করেন তাঁরা। সাগা দাবা উৎসবে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা জ্ঞান দিয়ে থাকেন গৌতম বুদ্ধের জীবনের তিন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে। তাঁর জন্ম, বোধিসত্ব লাভ ও তাঁর প্রথম জ্ঞান দেওয়ার বিষয়ে। পুজোর সময় প্রজ্জলিত করা হয় শতাধিক প্রদীপ। এই প্রদীপ প্রজ্জলনের সময় মনের ইচ্ছে জানালে তা পূরণ হয় বলে বিশ্বাস।
অনন্যা দে
সৈকত শী, পাঁশকুড়া: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া ব্লকের একটি ৪০০ বছরের প্রাচীন কালী মন্দিরে বার্ষিক তিথির পুজো হয় এক মাস ধরে। বিভিন্ন জায়গায় এই প্রাচীন কালী মন্দিরগুলির প্রতিষ্ঠার ইতিহাস চমকপ্রদ। লৌকিক কাহিনির পাশাপাশি অলৌকিক কাহিনিও আছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী বর্গভীমা হলেও এই জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন কালী মন্দির লক্ষ করা যায়। কালের নিয়মে কিছু ভগ্ন প্রায় হলেও বেশ কিছু আবার সংস্কার করে পুজোপাঠ চলে আসছে প্রাচীন দিন থেকেই।
সেরকমই একটি কালীমন্দির রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া ব্লকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া ব্লকে উড়িয়াগড় ফতেচক ফলহারিণী কালীমন্দির। এই মন্দির প্রায় ৪০০ বছরের বেশি পুরনো। এই মন্দিরে উত্থান ইতিহাসে রয়েছে নানা অলৌকিক কাহিনী। মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকেই আজও পুজো হয়ে আসছে। এই মন্দিরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল প্রতি বছর বার্ষিক পুজো হয় একমাস ধরে। প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে শুরু হয় পুজো।
আরও পড়ুন : এই নীল ফুল ও এই সাদা ফল নিবেদন করুন ব্রহ্মচারী বাবা লোকনাথের পুজোয়, তাঁর আশীর্বাদে ভরে থাকবে আপনার জীবন
এক মাস ধরে হয় পুজোপাঠ ও এক মাস পর প্রতিমার বিসর্জন ও নিরঞ্জন হয়। পুজোর এই একমাস ধরে চলে মেলা। জেলার পাশাপাশি ভিন জেলার নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা এসেই মন্দিরে পুজো দেন। এই মন্দিরের পূজোপাঠের বিষয়ে মন্দির কমিটির এক সদস্য জানান, ‘এবছর বার্ষিক তিথির পুজো পাঠ শুরু হবে ৫ জুন অমাবস্যা তিথিতে। শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতি। এই প্রাচীন মন্দির নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে।
পুজো চলবে এক মাস ধরে। অম্বুবাচী, পূর্ণিমা তিথিতে বিশেষ পুজো পাঠ হয়। প্রাচীন রীতিনীতি অনুসারে এই মন্দিরে পুজো হয়। পুজোর এই একমাস ধরে চলবে মেলা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও হাওড়া জেলার ভক্তরা এসে এই মন্দিরে পুজো দেন।’ পাঁশকুড়ার এই কালী মন্দির পুজো উপলক্ষে চলছে প্রস্তুতি।