Tag Archives: Kalipuja 2024

Kalipuja 2024: ৫২ রকমের ভাজা! তিন রকমের মাছ দিতে হয় মায়ের ভোগে! এই মা কালীর কাহিনি অবাক করবে

পূর্ব বর্ধমান: মা কালীর পুজোয় ভোগ হিসেবে সাধারণত খিচুড়ি, পোলাও, লুচি, নাড়ু দেওয়ার কথা শোনা যায়। কিন্তু পূর্ব বর্ধমান জেলার এই কালীকে ভোগ দেওয়ার নিয়ম একটু অন্যরকম। পূর্ব বর্ধমানের এই গ্রামের মা কালীকে ভোগে দিতে হয় তিন রকমের মাছ। এই রীতি বহু বছরের পুরানো। পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটের বেড়াগ্রামে বহু বছর ধরে  পূজিত হয়ে আসছেন মা কালী। ব্যানার্জী পরিবারের কথায়, এই পুজো শুরু করেছিলেন রায় রামানন্দ নামের এক সাধক। বর্তমানে এই বেড়া গ্রামে জনবসতি তৈরি হলেও বহু আগে এই জায়গা ছিল জঙ্গলে ঢাকা।

তাই সাধনা ক্ষেত্র হিসেবে বেড়া গ্রামকেই বেছে নিয়েছিলেন সাধক রামানন্দ। কথিত আছে, এই রামানন্দ তাঁর মৃত্যুর আগে, তার এক শিষ্যকে এই পুজোর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই থেকেই বেড়া গ্রামের ব্যানার্জী পরিবার এই কালী পুজোর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ব্যানার্জী পরিবারের মেয়ে রানি ঘোষ জানিয়েছেন, “এই পুজো কত বছরের পুরানো সেটা আমরাও সঠিকভাবে বলতে পারব না। আমরা শুনেছি, রাই রামানন্দ এখানে গঙ্গার ধারে তপস্যা করতেন এবং তিনি এই পুজো প্রথম শুরু করেছিলেন। অমাবস্যার দিন ভাজাপোড়া হয়। মায়ের ভোগের দিনে ১৮ থেকে ৫২ রকমের ভাজা দেওয়া হয়।”

আরও পড়ুন: গঙ্গার ধারে প্রাচীন এই মা অভয়া! কালী মায়ের কাহিনি অবাক করবে

এই বেড়া গ্রামের কালী মন্দিরের পাশেই রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। কথিত এই পঞ্চমুণ্ডি আসনে বসেই রামানন্দ সাধনা করতেন। এখনও পুরানো বিভিন্ন নিয়ম মেনে পূজিত হন রামানন্দের কালী। রীতি মেনে অমাবস্যায় চালভাজা সহ আরও বিভিন্ন রকমের ভাজা দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেবীর পুজো শুরু হয়। তবে মায়ের ভোগে দিতেই হবে তিন রকমের মাছ। মাগুর, ইলিশ এবং পোনা এই তিন ধরনের মাছ দেওয়া হয় ভোগে। এখানে তিন রাত্রি থাকে মা কালীর প্রতিমা। তার পরেই হয় প্রতিমা নিরঞ্জন। এমনিতে সারা বছর বেদির সামনে ঘট রেখে দেবীর পুজো চলে।

প্রতিদিনই অন্নভোগের ব্যবস্থাও করা হয়। তবে কালীপুজোয় বিশেষ ধুমধাম করে পুজোপাঠ করা হয়। কালীপুজোর সময় তৈরি হয় দেবীর প্রতিমা। এছাড়াও ডাকের সাজ এই কালীর অন্যতম।  বেড়া গ্রামের ব্যানার্জী পরিবার দায়িত্বে থাকলেও, এই পুজোকে কেন্দ্র করে মেতে ওঠেন সম্পূর্ণ গ্রাম। আশপাশ গ্রাম সহ দূর দূরান্ত থেকেও পুজো দেখার জন্য বহু মানুষ আসেন। কালীপুজোকে কেন্দ্র করে মেতে ওঠেন সকলেই।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

Kali Puja 2024: আজও ডগর, সানাই, নহবত সহযোগে বনেদি ভাবে পুজো হয়ে আসছেন মা চাঁদুনীর 

শান্তিপুর: আজও ডগর বাজনা এবং নহবত, সানাই সহযোগে পুজো হয়ে আসছে শান্তিপুরের বহু প্রাচীন এবং জাগ্রত চাঁদুনী মায়ের। আগেকার দিনে বিশেষ করে বিবাহ অনুষ্ঠানে মেয়ের বাড়িতে ঢোল সানাই সহযোগে নহবত বসানো হত। তবে সেই নহবত ছিল স্বপ্নের মতো রাজ রাজা কিংবা জমিদার ছাড়া সামর্থ্য ছিল না নহবাত বসানোর অনেকেরই। এরপর মধ্যবিত্ত পরিবারেও উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে দেখা যেত নহবতের আসর। তবে একবিংশ শতাব্দীতে এসে ধীরে ধীরে কমতে লাগলো নহবতের করিশমা। তবে শান্তিপুরের চাঁদুনী মায়ের পুজোয় নহবতের পরম্পরা বজায় রয়েছে আজও। মূল ফটকের উপরে সকল পুণ্যার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বনেদিয়ানা।

২০০০ সালের আগে থেকে মুর্শিদাবাদের কাঁদি থেকে নহবতের আসর জমাতে কালী পুজোয় চাঁদুনী মায়ের কাছে ডাক পড়ে মহেশ্বর বিদ্যানের। তার বাবা ঠাকুর দাদার আমলের এই পেশা এখন শিখছে তার নিজের ছেলেও। এবছর নহবত নিয়ে তারা মুর্শিদাবাদ থেকে তিনজন এসেছেন। তিনি জানান মাঝে কিছুটা ভাটা পড়লেও ইদানিং কালে নহবতের ডাক বেশ ভালই পাওয়া যায়। পারিশ্রমিকও আগের থেকে অনেকখানি বেড়ে গেছে চাহিদার কারণে। পূজোর মরশুম ছাড়া বিয়ের মরশুমেও এখন আগের মতই ডাক পাচ্ছেন তারা। আর সেই কারণে তার পাশাপাশি তার ছেলেও এই পেশায় আসতে আগ্রহী।

আরও পড়ুনBhai Phota Special Rituals: ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় ১দিন এড়িয়ে চলুন ‘এই বিশেষ’ রং, পাতে রাখবেন না অত্যন্ত জনপ্রিয় ‘এই’ পদ!

যদিও পুজোর সময় শ্যামা সংগীত গান বাজালেও বিয়ের আসরে মূলত ক্লাসিক্যাল গানই বাজাতে হয় মানুষকে মনোরঞ্জন দেওয়ার জন্য। আর এই সমস্ত গান প্রতিনিয়ত বাড়িতে রেওয়াজের মাধ্যমে হয়ে ওঠে আরও দৃঢ়।

উল্লেখ্য কথিত আছে ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক সাড়ে পাঁচশো বছর আগে চাঁদুনীমা প্রথম পূজিতা হন কাশীনাথ সার্বভৌমের হাত ধরে। কাশীনাথ ছিলেন শ্রীচৈতন্যদেবের গৃহ শিক্ষক। কথিত আছে বালক কাশিনাথ তার মায়ের কাছে আবদার করেন কালী মূর্তি গড়ে দেওয়ার জন্য। মা সাধ্যমতো মূর্তি করে দেওয়ার পর কাশিনাথ পুজো করেন। সেই ধারা এখনও বজায় রয়েছে এই পুজোয়। চাঁদুনী বাড়ির জ্যেষ্ঠ গৃহবধুর হাত দিয়ে বিজয় দশমীর দিন পাটে মাটি দেওয়া হয়, যা গায়ে মাটি বলে পরিচিত। এরপর মৃৎশিল্পী এসে মূর্তি গড়েন এবং বাড়ির কোনও সন্তানের হাত দিয়েই চাঁদুনী মায়ের পুজো সম্পন্ন হয়।

Mainak Debnath

Kalipuja 2024: কালীপুজোতে ঠাকুর দেখুন হাওড়ায়! থিমের চমকে অবাক হবেন

দুর্গা পুজোর সঙ্গে গা ভাসিয়ে কালীপুজোতে ও থিমের মোড়ক! এবার আরো জাঁকজমক আলোর উৎসবে মেতেছে জেলার মানুষ।
দুর্গা পুজোর সঙ্গে গা ভাসিয়ে কালীপুজোতে ও থিমের মোড়ক! এবার আরো জাঁকজমক আলোর উৎসবে মেতেছে জেলার মানুষ।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আকর্ষণীয় মণ্ডপ আলোক সজ্জা ও দৃষ্টি আকর্ষণের প্রতিমা। শহর থেকে গ্রামে কালী পুজোতে আকর্ষণীয় আলো একইসঙ্গে আকর্ষণীয় মণ্ডপ।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আকর্ষণীয় মণ্ডপ আলোক সজ্জা ও দৃষ্টি আকর্ষণের প্রতিমা। শহর থেকে গ্রামে কালী পুজোতে আকর্ষণীয় আলো একইসঙ্গে আকর্ষণীয় মণ্ডপ।
হাওড়ার উদয়নারায়নপুর এ কালীপুজো বেশ জাঁকজমক। অভিযান সমিতি, সবুজ শ্রী সংঘ, সবুজ চক্র সহ বিভিন্ন মন্ডপ এবার আকর্ষণীয় সাজ।
হাওড়ার উদয়নারায়নপুর এ কালীপুজো বেশ জাঁকজমক। অভিযান সমিতি, সবুজ শ্রী সংঘ, সবুজ চক্র সহ বিভিন্ন মন্ডপ এবার আকর্ষণীয় সাজ।
আমতার গগন শক্তি সংঘে এবার ৪৮ তম বর্ষে আকর্ষণীয় থিমের মণ্ডপ।
আমতার গগন শক্তি সংঘে এবার ৪৮ তম বর্ষে আকর্ষণীয় থিমের মণ্ডপ।
কাঁটাপুকুর বটতলা সবুজ সংঘের পুজো মণ্ডপে সহজ পাঠের থিম ফুটে উঠেছে।
কাঁটাপুকুর বটতলা সবুজ সংঘের পুজো মণ্ডপে সহজ পাঠের থিম ফুটে উঠেছে।
জেলার মানুষের অন্যতম আকর্ষণ উদয়নারায়নপুর ব্লক ও জগৎবল্লভপুর বেলে গ্রামের কালীপুজো। এছাড়াও জেলার বেশ কিছু আকর্ষণীয় মণ্ডপ সেজে ওঠে।
জেলার মানুষের অন্যতম আকর্ষণ উদয়নারায়নপুর ব্লক ও জগৎবল্লভপুর বেলে গ্রামের কালীপুজো। এছাড়াও জেলার বেশ কিছু আকর্ষণীয় মণ্ডপ সেজে ওঠে।

Kalipuja 2024: দিঘা যাওয়ার পথেই পড়বে মা ঝিংলেশ্বরীর মন্দির! কালীপুজোতে হয় বিশেষ পুজো! জানুন

নন্দকুমার: গ্রাম বাংলার লোকালয়ে অনেক আঞ্চলিক বা লোক দেবদেবীর কথা আমরা জানতে পারি সেই এলাকার মানুষজন ও বাংলা সাহিত্যে। দিঘা যাওয়ার জাতীয় সড়কের পাশে নন্দকুমার ব্লক-এর ভবানীপুর গ্রামে এরকম লোকদেবী বিরাজ করে আছেন। দেবীর নাম ঝিংলেশ্বরী। সারাবছরই প্রতিদিন কালী রূপে পূজিত হয়। কালীপুজোর দিন বিশেষ ভাবে পূজিত হন লোক দেবী। ঢেউ-এর তটদেশ থেকে উৎপত্তি তাই নাম ‘ঢিঙ্গুলেশ্বরী’। কিন্তু লোকমুখে বেশি পরিচিত ঝিংলেশ্বরী মা হিসেবে। নন্দকুমার ব্লকের ভবানীপুর এলাকায় ঝিংলেশ্বরী মায়ের প্রাচীন ইতিহাস সত্যি অবাক করার মত।

বর্তমান সেবাইতদের কথায় আনুমানিক প্রায় পাঁচ শতাধিক বছর আগে জাহাজের মাস্তুলের উপর অধিষ্ঠিত হয়ে আবির্ভাব ঘটেছে মা ঝিংলেশ্বরীর।ভৌগলিক অবস্থানগত ভাবে তৎকালীন সময়ে এই এলাকা নদীগর্ভ ছিল। নৌকা, বোট, জাহাজ চলাচল করত। তাম্রলিপ্ত প্রদেশের (বর্তমান তমলুক) রাজা পুজোর ব্যবস্থা করেন।

আরও পড়ুন: মন থেকে ডাকলে মা খালি হাতে ফেরান না! এখনও মুঘল আমলের পুজো হয় বর্ধমানের এই গ্রামে

সেই থেকে বর্তমানেও নিত্য পুজো হয়ে আসছে। এখন মন্দির পাকা হয়েছে। তবে জাহাজের মাস্তুল সহ মাটির যে বেদীতে মা ঝিংলেশ্বরী অধিষ্ঠিত হয়ে রয়েছেন সেই অংশের কোনও সংস্কার করা হয়নি। সেবাইতরা জানান তেমনটাই মায়ের আদেশ।বর্তমানে সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে। দুর্গাপুজো ও কালীপুজাতে বিশেষ পুজোর্চনা হয় বিশালাক্ষী রূপে।

প্রতিদিন মাছ, মাংস, তরকারি, পায়েস, মিষ্টান্ন সহযোগে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। এছাড়াও ভক্তদের মানতে হাঁস, পাঁঠা বলিও হয়। এই এলাকায় বসবাসকারী প্রত্যেকে দেবী ঝিংলেশ্বরীকে নিজেদের পরিবারের একজন মনে করেন। তাই চাষের সবজি, মাছ, পালিত হাঁস, ডিম নিবেদন করে। তাছাড়া এই এলাকা ছাড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রলার, বোট, জাহাজ মালিকরা পুজো দেন।

সৈকত শী

Kalipuja 2024: মন থেকে ডাকলে মা খালি হাতে ফেরান না! এখনও মুঘল আমলের পুজো হয় বর্ধমানের এই গ্রামে

পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার নলাহাটি গ্রামে মা কালীর ঘট ছাড়াই পুজো হয়৷ পঞ্চমুণ্ডি আসনে মা কালীকে বসিয়ে পুজো শুরু হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে৷ এ ছাড়াও এই পুজোয় রয়েছে নানা পুরানো নিয়ম রীতি। পুজোকে কেন্দ্র করে নলহাটি-সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের আবেগও জড়িয়ে রয়েছে পুজোর সঙ্গে। বর্তমানে চট্টোপাধ্যায়, ভট্টাচার্য, বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়, পরিবারের সদস্যরা এই পুজো পরিচালনা করে আসছেন। পুজো প্রসঙ্গে সম্পদ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “সম্রাট আকবরের সময়কালের একজন সাধক তার নাম ছিল কালিপদ বাগিস। তিনি এখানে পুজো শুরু করেন। এই পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে অন্যান্য কালী পুজোয় যে ঘট থাকে এখানে কোনও ঘট নেই। এখানে পঞ্চমুণ্ডির আসন আছে।”

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে মা কালীর প্রতিমা ১৫ দিন ধরে তৈরি করা হয়। তবে পুজোর আগের দিনেই শুধুমাত্র প্রতিমার গায়ে রঙ দেওয়া হয়। যিনি প্রতিমার গায়ে রঙ করেন অর্থাৎ পালকে উপোস করে রঙ করতে হয়। নহবতের সুরে ভোরবেলায় হয় চক্ষুদান। পুজোয় রয়েছে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য। পুজোর দিন সকালে গ্রামের সধবা মহিলারা সিঁদুর, আলতা, পান, সুপারি-সহ নানা উপকরণ দিয়ে পুজো দেন মা কালীকে। এই পুজো হতে হতে প্রায় দুপুর ৩ টে বেজে যায়। তারপরেই নহবতের সুর এবং ঢাকের তালে চলে সিঁদুর খেলা। পরবর্তীতে সন্ধ্যা বেলায় হয় ধুনো পোড়ানো।

আরও পড়ুন: এখানে গেলেই গা ছমছম করবে! অট্টহাসের জঙ্গলেই রয়েছেন রঘু ডাকাতের মা কালী

এরপর মা কালীকে তোলা হয় মন্দিরের গর্ভগৃহের আসনে। সেখানে বিভিন্ন অলংকার এবং সাজ দিয়ে মা কালীকে সাজিয়ে তোলেন ব্রাহ্মণ।তবে অমাবস্যা পড়ার পর থেকেই পুজো শুরু হলেও পুজো চলে বিসর্জনের দিন সকাল পর্যন্ত।সম্পদ মুখোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, “এখানে ক্ষীরের মোষও বলিদান হয়। পুজোর পরের দিন বিকেল নাগাদ পিতলের ঘটি কাড়াকাড়ি খেলা হয়। তারপর স্থানীয় দোকানদারদের বিক্রি বাটার খোঁজ খবর নিয়ে, সন্ধ্যা আটটা নাগাদ নিরঞ্জনের  জন্য মাকে বের করা হয়। “

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মা কালীকে গাড়ি অথবা কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই বিসর্জনের দিন বাঁশ দিয়ে প্রতিমাকে টানতে টানতে মন্দির থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে একটি পুকুরে বিসর্জন করা হয়। এই গ্রামে মা কালীর নিত্যসেবা হয়। তাই বিসর্জনের পরে মূল মন্দিরে আবার নিত্যপুজো হয়৷ নলাহাটির মা কালীকে নিয়ে ঘিরে অনেকের বহু বিশ্বাস রয়েছে৷ গ্রামবাসীদের মতে মাকে ডাকলে কাউকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয় না। শুধুমাত্র এই গ্রাম নয়, আশেপাশের আরও বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দারা উৎসবের মেজাজে মেতে ওঠেন এই পুজোকে ঘিরে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

Weather Update: ‘দানা’র পর এবার বানভাসি হতে চলেছে বাংলা? আবহাওয়ার বিরাট আপডেট

‘দানা’র পর এবার বানভাসি হতে চলেছে বাংলা? এল বিরাট আপডেট। কালীপুজোর আগেই ফের ডুববে বাংলা?

Kalipuja 2024: এখানে গেলেই গা ছমছম করবে! অট্টহাসের জঙ্গলেই রয়েছেন রঘু ডাকাতের মা কালী

পূর্ব বর্ধমান: রঘু ডাকাত, এই নাম প্রায় সকলেরই জানা। বিভিন্ন গল্পের বই থেকে শুরু করে সিনেমার পর্দাতেও রঘু ডাকাতের নাম পাওয়া যায়। এখনও কান পাতলে শোনা যায় রঘু ডাকাতের বিভিন্ন গল্প কাহিনী। রঘু ডাকাতের বিভিন্ন ঘটনাবলী ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রান্তে। তবে কথিত আছে, রঘু ডাকাত ছিল মা কালীর ভক্ত। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে সে মা কালীর পুজো দিয়ে, তারপর রওনা দিত ডাকাতির উদ্যেশ্যে।

সেরকমই পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও এক জায়গা রয়েছে, যেখানে মা কালীর পুজো করত রঘু ডাকাত নিজে! কথিত আছে, বেশ কয়েক যুগ আগে রঘু ডাকাত পার্শ্ববর্তী জেলা নদীয়া থেকে ব্রিটিশ পুলিশের তাড়া খেয়ে কেতুগ্রামের অট্টহাসের জঙ্গলে তার আস্তানা গেড়েছিল। বর্ধমান,বীরভূম, মুর্শিদাবাদে দাপটের সঙ্গে ডাকাতি করত রঘু । এমনকী অট্টহাস মন্দির সূত্রে জানা যায়, ডাকাতি করতে যাবার আগে রঘু ডাকাত এই অট্টহাস জঙ্গলে মা কালীর পুজো করে রওনা দিত।

আরও পড়ুন: ঘন-ঘন অসুখে পড়ছেন? ঠিক নিয়মে বাসন মাজছেন তো? না হলেই বড় বিপদ

কেতুগ্রামের এই জায়গায় ঈশাণী নদীর তীরে জঙ্গলের মধ্যেই বেশ কয়েকবছর কাটিয়েছিল রঘু ডাকাত। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের অট্টহাসের সতীপীঠে রঘু ডাকাতের স্নেহের মা কালী আজও পূজিত হয় মহা ধূমধামে। এই প্রসঙ্গে অট্টহাস সতীপিঠের সেবক রামজি মহারাজ জানিয়েছেন, “আমাদের এখানে আছে রটন্তী কালী মন্দির। ওইটাকেই রঘু ডাকাতের কালি বলে। কথিত আছে রঘু ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ওখানে পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত। তবে আমি ডাকাত বলতে রাজি নই তার কারণ সে গরিবদের জন্য ডাকাতি করতে যেত।”

পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম সংলগ্ন দক্ষিণডিহি গ্রামের শেষ ভাগে রয়েছে অট্টহাস সতীপীঠ। মন্দিরের সেবকের কথায় এখানে দেবী স্বয়ংভু। তাই এই মন্দিরের সঠিক বয়স বলা যায় না। জঙ্গলাকীর্ণ, নিরিবিলি এই স্থানে দেবীর মূল মন্দির ছাড়াও রয়েছে নাট মন্দির, কালীমন্দির এবং পঞ্চমুণ্ডির আসন। প্রতিবছর দোল পূর্ণিমার সময় মহাপুজো অনুষ্ঠিত হয় এই মন্দির চত্বরে। অপার সবুজ আর নির্জন ঈশানী নদীর বাঁকে মন শান্ত করা পরিবেশে ঘুরে আসতে পারেন পূর্ব বর্ধমান জেলার এই শক্তিপীঠ থেকে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

Kalipuja 2024: ২১৪ বছর ধরে পুজো হচ্ছে মা বনকালীর! মায়ের দর্শনেই যা চাইবেন, তাই পাবেন, জানুন অজানা কাহিনি

পুরুলিয়া :  ২১৪ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচেই পূজিত হয়ে আসছে পুরুলিয়া বরাবাজারের বেলতলা কালী মেলার মা কালী। এখানে মা কালী পুজিত হন নিরাকার রূপে। নেই মন্দিরের কোনও আচ্ছাদন। চারিদিক গাছ গাছালিতে মোড়া, বেদির উপরে মায়ের পুজো হয় এখানে। দীর্ঘ ২১৪ বছর ধরে মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত ঘটের ওপরে মাটির তৈরি ছোট ছোট ঘোড়া ও হাতি দিয়ে থাকেন ভক্তরা। এইভাবে পূজিত হন বলরামপুরের মা। বহু দূর দুরান্ত থেকে ভক্তরা নিজেদের মনবাসনা জানাতেই ছুটে আসেন মায়ের মন্দিরে। কথিত আছে কোনও ভক্ত যদি এই মন্দিরে মায়ের কাছে মন থেকে কিছু চেয়ে থাকেন ভক্তের সেই মনোবাসনা পূরণ করেন মা বন কালী।

এ বিষয়ে মন্দিরের পূজারী বিমল মিশ্র বলেন , ২১৪ বছর ধরে এখানে পুজো হয়ে আসছে। এখানে মন্দির করার নির্দেশ নেই তাই খোলা আকাশের নিচেই পুজো হয়। মানুষের আস্থা বিশ্বাস ভক্তি থেকে এখানে ভক্তরা ছুটে আসেন। ‌ এ বিষয়ে গ্রামেরই এক বাসিন্দা লক্ষ্মী ধীবর বলেন , গ্রামের বাচ্চাদের বকাঝকা করা যায় না। শিশুদের স্নেহ করলে সন্তুষ্ট হন মা কালী।

আরও পড়ুন: বাচ্চাদের দেখলেই কামড়ে দিচ্ছে! রান্না ঘর থেকে খাবার নিয়ে পালাচ্ছে! এ কোন বাঁদরের পাল্লায় পড়লেন গ্রামবাসী!

এককালে বলরামপুর রাজ পরিবারের রাজ সিংহাসন নিয়ে শুরু হয়েছিল টানাপোড়েন। আইনি জটিলতা কাটিয়ে ওঠার পর সিংহাসনে বিরাজিত হয়েছিলেন রাজা। তারপরে রাজার ইচ্ছাতেই কালীঘাটের পুরোহিতকে নিয়ে আসা হয়েছিল বলরামপুরে তার হাত ধরেই সূচনা হয়েছিল এই মা কালীর পুজো বলে জানিয়েছেন রাজ পরিবারের সদস্য তথা আইনজীবী বিজয় কুমার সিংহদেও। জেলা পুরুলিয়ায় এমন নানান ঐতিহাসিক কাহিনিতে মোড়া মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বরাবাজের নামোপাড়া বেলতলা কালী মেলা। ভক্তি ও ভক্তদের আস্থাতেই মায়ের পুজো হচ্ছে ২১৩ বছর ধরে।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি

Kalipuja 2024: ২০০ বছরের প্রাচীন এই কালীপুজো! জানুন মায়ের পুজোর অজানা কাহিনি

উত্তর দিনাজপুর: উত্তর দিনাজপুর জেলার শতাব্দী প্রাচীন কালীপুজোর মধ্যে অন্যতম হল হেমতাবাদ থানার কালীপুজো। ২০০ বছরের পুরনো এই পুজো। হেমতাবাদ থানা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের যৌথ উদ্যোগে প্রাচীন বটগাছের নীচে মন্দিরে ঘটা করে এ দেবীর পূজা হয়ে আসছে। অতিরিক্ত জাঁকজমকভাবে এই পুজো করা না হলেও নিষ্ঠা ভরে এই পুজো করা হয় এই স্থানে।

এই পুজোতে পুলিশ ব্লক ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকে এই পুজোতে। এই পুজো এবং দেবী মাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গল্প কথা রয়েছে এলাকায়। এই পুজো কমিটির সম্পাদক প্রদীপ দত্ত জানান, এ পুজো বহু প্রাচীন পুজো। নিয়ম নিষ্ঠা সহ কারে এই পুজো করা হয়। ফুল দিয়ে মূলত এই পুরো মন্দির সাজানো হয়।

আরও পড়ুন: সিঙ্গুরের ডাকাতে কালী! রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাতের হাতে শুরু হয়েছিল এই পুজো! জানুন

এই কালীপুজোতে ভোগ দেওয়া হয় ছোলার ডাল মিশ্রিত খিচুড়ি দিয়ে, এছাড়াও বিভিন্ন ফল ও পায়েস। শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলা নয়,ভিন জেলা ও রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ ছুটে আসেন এই পুজো দেখতে।

পিয়া গুপ্তা 

Kali Puja 2024: সিঙ্গুরের ডাকাতে কালী! রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাতের হাতে শুরু হয়েছিল এই পুজো! জানুন 

হুগলি: আজ থেকে প্রায় ৫৫০ বছর আগেকার কথা, জঙ্গলে ঘেরা সিঙ্গুর এলাকায় সেই সময় থাকতেন রঘু ডাকাত ও তার সঙ্গী ডাকাত গগন সরদার। সেই থেকেই প্রতিষ্ঠিত এই ডাকাত কালী মন্দির। বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের পাশে পুরুষোত্তমপুর এলাকায় এই ডাকাতকালী মন্দির ঘিরে রয়েছে  ইতিহাসের ছোঁয়া। হাওড়া-তারকেশ্বর শাখার সিঙ্গুর রেলস্টেশনে নেমে হেঁটে অথবা টোটোয় চেপে মন্দিরে আসা যায়।

রেওয়াজ মেনেই আজও কালিপুজোর দিনে মায়ের প্রসাদ হিসাবে চালকড়াই ভাজা দেওয়া হয়।  এ ছাড়াও কালীপুজোর দিন লুচি ভোগ, ফল দেওয়া হয় পুজোর নৈবিদ্যে। মন্দিরের পুরোহিত সুভাষচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় বলেন, কালী পুজোর দিন চার প্রহরে চার বার পুজো ও ছাগ বলি হয়। মল্লিকপুর গ্রামে এই ডাকাতকালী মন্দির থাকার কারণে আশেপাশের জামিনবেরিয়া, পুরসোত্তমপুর ও মল্লিকপুর গ্রামে কোনও বাড়িতে কালীপুজো হয়না। এমনকি কারও বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো থাকে না ক্যালেন্ডারে আঁকা কালী মূর্তির ছবি।

আরও পড়ুন: কালীপুজোয় বৃষ্টি নাকি শীত? কী বলছে আবহাওয়া দফতর জানুন

মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক মদন মোহন কোলে বলেন, আগে ডাকাতরা মাটির কুঁড়ে ঘর বানিয়ে মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করে। পরে বর্ধমানের রাজা মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করেছিলেন।

রাহী হালদার