Tag Archives: Flood Situation

Mamata Banerjee on flood situation: ‍বন্যায় প্রাণ গিয়েছে ২৮ জনের! মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

বীরভূম: জলাধারগুলির ছাড়া জলে ভেসে গিয়েছে রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের বহু এলাকা। জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বন্যায় ভেঙে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি, ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে প্রচুর। সেই সঙ্গে প্রাণও গিয়েছে বহু মানুষের। এবার বন্যায় স্বজনহারা পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: মুড়ি মুড়কির মতো ওষুধ খাচ্ছেন? লিভারের মহাশত্রু এই ৩ ওষুধ! নোট করে নিন নাম! জানুন কী বলছেন বিশেষজ্ঞ

বন্যায় মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বন্যায় ২৮ জন মারা গিয়েছেন। এছাড়া যে সব পরিযায়ী শ্রমিক মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারকেও দেওয়া হচ্ছে ক্ষতিপূরণ। মঙ্গলবার বীরভূমে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে দুপুরে বৈঠক করেন। তার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন তিনি।

আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে বহু ট্রেন বাতিল এবং যাত্রাপথ পরিবর্তনের ঘোষণা রেলের! পুজোর আগে যাত্রীদের প্রবল ভোগান্তি

মমতা বলেন, “বিধায়করা গ্রামীণ রাস্তায় খরচ করবে তাদের টাকা। আর সাংসদরা এক কোটি স্কুলে, চার কোটি গ্রামীণ রাস্তায় দেবে। ডিভিসির জল ছেড়ে ‘ম্যানমেড ফ্লাড’ করা হয়। ঝাড়খন্ডের জলে প্রতিবছর বন্যা করা হয়। ১৯৯৯ সালে শেষবার এত জল ছাড়া হয়েছিল। আমরা সব মনিটরিং করছি। এখন জল কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক ছাড়ে। খানাকুল, ঘাটাল, আমতা, উদয়নারায়ণপুর এখনও জলের তলায় আছে। মুখ্যসচিব ,মন্ত্রীরা পরিদর্শন করেছেন। একাধিক জায়গায় কমিউনিটি কিচেন আছে। ৬৫ হাজার বাড়ি মাইনরিটি বিভাগ থেকে করে দিচ্ছি। এগারো লক্ষ বাড়ির জন্য সমীক্ষা করা হচ্ছে। এখনও ৫০ লক্ষ মাটির বাড়ি বাংলায় আছে।”

Howrah News: সাপে কামড়ানো শিশুকে উদ্ধার, বাড়ি-বাড়ি ত্রাণ পৌঁছানো, বন্যা দুর্গতদের পাশে হাওড়ার স্থানীয় যুবক, জনপ্রতিনিধিরা

হাওড়া: হাওড়ার বন্যা পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ ৷  বন্যা দুর্গত মানুষদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়াল একদল যুবক! অতিবৃষ্টি বা ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েে দক্ষিণবঙ্গের দামোদর নিম্ন অববাহিকার বহু অঞ্চল।

বর্ষায় প্রায় প্রতি বছরই ডিভিসি জল ছাড়ে৷ আর তাতেই বন্যার কবলে পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ। মেদনীপুর, হুগলি জেলার বেশ কিছু অঞ্চল, হাওড়ার উদয়নারায়নপুর, আমতা  এই জলে প্লাবিত হয়।

বন্যার কারণে দুর্ভোগ এখানকার মানুষের প্রায় প্রতিবছরের সমস্যা। গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়৷  ফলে প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হয় এলাকার মানুষ। বিশেষ করে প্রতিবছর বন্যা পরবর্তীতে কৃষি নির্ভর মানুষের অবস্থা  শোচনীয় হয়ে দাঁড়ায়।

এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানুষকে বিভিন্নভাবে বিপদ মুক্ত করতে প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে দায়িত্বভার পালন করছে। এবারের বন্যার ভয়াবহতা অনেক বেশি। বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে৷

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে জেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা মানুষকে সহযোগিতা করার সমস্ত চেষ্টা করছে৷ উদ্ধার কার্য চালানো হচ্ছে। মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে সব রকম প্রচেষ্টা করছে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল।

তবে পিছিয়ে নেই সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও  যুবকেরাও৷ স্থানীয় একদল যুবক উদ্ধার কার্য-সহ নানা বিপদে  প্রতিনিয়ত মানুষের পাশে রয়েছে। রাত দিন এক করে ওঁরা মানুষকে বিপদমুক্ত উদয়াস্ত খাটছে ।

এমনই ছবি দেখা গেল হাওড়ার উদয়নারায়নপুরে। সেখানে প্রশাসন এবং স্থানীয় বিধায়কের সহযোগিতায় তৈরি খাবার  যুবকরা পৌঁছে দিচ্ছেন বন্যা কবলিত মানুষের কাছে।

জল বাড়ার শুরু হতেই মানুষকে উদ্ধার করা হোক বা  সাপে কামড়ে আক্রান্ত দুই বছরের শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হোক তাঁরা দিন রাত এক করেছে৷

এক ব্যক্তি বানের জলে ভেসে গিয়েছিল৷ স্থানীয় যুবকরা তাঁকে উদ্ধার করেন৷ তারপর তাঁর বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেন। আবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট যুবককে উদ্ধার করে চিকিৎসা কেন্দ্রেও নিয়ে যান৷ এই ূববিপদের সময় স্থানীয়দের পাশে এসে দাঁড়ালেন উদয়নারায়নপুর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি লক্ষীকান্ত দাস।

এ প্রসঙ্গে লক্ষীকান্ত দাস জানান, ‘‘বিপদে পাশে দাঁড়ানো হল মানুষের কর্তব্য। আর সেই দিক থেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার দায়িত্ব আরও বেশি। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী এবং স্থানীয় বিধায়কের নির্দেশ মতই আমরা এই কর্মকাণ্ডে শামিল রয়েছি।’’ ।

রাকেশ মাইতি

Paschim Medinipur News: রাস্তার উপর দিয়ে চলছে নৌকা, পুজোর আগেও জলমগ্ন ঘাটাল !

পশ্চিম মেদিনীপুর: ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে পরিস্থিতি। দুর্যোগ কাটলেও দুর্ভোগ কাটছে না ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। এখনও জলমগ্ন একাধিক গ্রাম, বিভিন্ন ওয়ার্ডের মধ্যে এখনও জমে জল। আবহার উন্নতি হয়েছে বেশ কয়েকদিন হল, বৃষ্টি হয়নি, তবে জমা জলে দুর্ভোগ কাটছে না।

রাস্তার উপর দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাতায়াতের প্রধান বাহন নৌকো। বেশ কিছু জায়গা থেকে জল সরলেও ঘরের মধ্যে ঢোকা দায় হয়ে উঠছে। বন্যার কারণে বেড়েছে সাপের উপদ্রব।

আরও পড়ুন: ইউরিক অ্যাসিডের যম, এই পাতা খেলেই গায়েব হাঁটু ব্যথা, জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

জল নামার পর চেনা ছন্দে ফেরার চেষ্টা মানুষজনের। তবে এখনও বেশ কয়েকদিন জলমগ্ন থাকার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

আরও পড়ুন: সাবধান! এইভাবে মুখ ধুচ্ছেন না তো? ত্বক একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে, দেখে নিন মুখ ধোয়ার সঠিক উপায়…

ডিভিসির ছাড়া জলে এবং বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যা ক্রমশই ভয়াবহ আকার ধারণ করে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া প্রায় এক সপ্তাহ কাটলেও এখনও জলমগ্ন বিভিন্ন এলাকা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের পাশাপাশি ডেবরার বিভিন্ন জায়গা এখনও জলমগ্ন। মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ডিঙ্গি বা নৌকো। এখনও বিভিন্ন জায়গায় বাড়ির একতলা জলের ভর্তি।

দোতলায় রান্নাবান্না এবং সংসার চলছে বন্যার্ত মানুষদের। বিভিন্ন জায়গায় এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। স্বাভাবিকভাবে বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়ে।

ফের রবিবার ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন ঘাটালের সাংসদ দেব। শুধু তাই নয়, জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে প্লাবিত এলাকা সরজমিনে তদন্ত করে দেখেন মুখ্য সচিব।

এছাড়াও ডেবরার বন্যা প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবির, মন্ত্রী জাভেদ খান সহ অন্যরা। প্রতিদিনই ধীর গতিতে নামছে জল। একের পর এক দিন এগিয়ে আসছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবের। তবে পুজোর ভাবনা তো দূর, জীবন বাঁচাতে এখনও প্রতিদিন হয়রানি শিকার হচ্ছেন হাজারও হাজারও মানুষ।

আবহাওয়ার উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কাটেনি। বিভিন্ন জায়গায় খোলা হয়েছে ত্রান শিবির। পুলিশ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ একযোগে কাজ করছে মানুষদের জন্য। তবে কবে বন্যা থেকে সুরাহা মেলে প্রশ্ন সকলের।

রঞ্জন চন্দ

Mamata Banerjee- Anubrata Mandal: বন্যার আবহে বীরভূম-সহ তিন জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর! কেষ্ট-সাক্ষা‍ৎ হবে কি?

কলকাতা: বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে তিন দিনের দক্ষিণবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম- এই তিন জেলায় সফর করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন শুধু নয়, সেই সঙ্গে করবেন প্রশাসনিক বৈঠকও।

সোমবার পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অফিসে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করবেন।  তারপর পূর্ব বর্ধমান লাগোয়া কয়েকটি এলাকায় পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী, যাবেন বাঁকুড়ার বড়জোড়াতেও।

আরও পড়ুন: নিউ টাউনে রহস্যমৃত্যু! বহুতলের গেট থেকে উদ্ধার রক্তাক্ত ঝুলন্ত মৃতদেহ

পরের দিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার বোলপুরে করবেন প্রশাসনিক বৈঠক। মূলত বোলপুরে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিভিউ মিটিং করবেন মুখ্যমন্ত্রী, ঐদিন বোলপুরেই রাত্রিবাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার বোলপুর থেকে কলকাতা ফেরার পথে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা মমতার।

আরও পড়ুন: ৫৮ জন পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ! বড় সাজা হল চিনের আমলার

অনুব্রত মণ্ডল জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূম সফর। মঙ্গলবার বীরভূমে পৌঁছাবেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের। বীরভূম জেলার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটি আগেই তৈরি করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোর কমিটির সদস্যদের নিয়েও বৈঠক করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রত মণ্ডল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাক্ষাৎ হবে? জল্পনা চরমে।

Flood Situation: জলের তলায় একাধিক বাড়ি, এখনও বানভাসি খানাকুলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল

খানাকুল: অতি বৃষ্টির জেরে দক্ষিণবঙ্গের অনেকজায়গাই বানভাসি হয়েছিল৷ খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতিও বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল৷ ২২ সেপ্টেম্বর, রবিবার খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে৷

কিন্তু এখনও বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় রয়েছে। প্রায় পাঁচ দিন কেটে গেলেও জলমগ্ন খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা।

আরও পড়ুন: মধ্যমগ্রামে ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা, পিকআপভ্যান পিষে দিল ব্যক্তিকে, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু

উঁচু এলাকা থেকে জল কমতে শুরু করলেও জলমগ্ন খানাকুলের মারোখানা, পানশিউলি, জগৎপুর, গড়েরঘাট, বন্দর, ধান্যঘোরী, ঘোড়াদহ, পোল-সহ একাধিক এলাকা। এখনও এই সমস্ত এলাকায় একতলা বাড়ির ভিতরে জল ঢুকে রয়েছে।

আরও পড়ুন: ২৬/১১ মুম্বই হামলার কড়া নিন্দা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বড় পদক্ষেপ কোয়াডে, নেওয়া হল যে সিদ্ধান্ত…

গ্রামের ভিতরের বেশ কয়েকটা রাস্তায় এক বুক সমান জল। যদিও কয়েকটি এলাকায় ডুবে যাওয়া বাড়ির চাল দেখা যেতে শুরু করেছে৷ যদিও জল ধীরে ধীরে হলেও নামছে৷ এখনও উঁচু বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিতে হয়েছে দুর্গতদের। ত্রাণ শিবিরেও আছেন অনেকে।

অনেকে উঁচু রাস্তায় তাবু খাটিয়ে বসবাস করছেন। যদিও ত্রাণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠছে দিকে দিকে। তার জেরে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে খানাকুলের বন্যা দুর্গতদের। যদিও প্রশাসনের দাবি সর্বত্রই ত্রাণ পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। পিএইচইর তরফে পর্যাপ্ত জলের পাউচ সরবরাহ করা হচ্ছে।

শুভদীপ ঘোষ

Flood Situation: বন্যা দুর্গত এলাকায় বাড়ছে সাপের উপদ্রব, উৎকণ্ঠায় সাধারন মানুষ

পশ্চিম মেদিনীপুর: বেশ কয়েকদিন অতিক্রান্ত, বন্যা পরিস্থিতি ঢিমে তালে উন্নতি হচ্ছে। ডিভিসি থেকে জল ছাড়া এবং একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে বানভাসি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কাটলেও এখনও স্বাভাবিক নয় সাধারণ জনজীবন। ঘাটাল পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ড এখনও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। এছাড়াও পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক জায়গা জলের তলায়। এখনও বেশ কিছু জায়গায় রাস্তার উপর দিয়ে চলছে নৌকো। স্বাভাবিকভাবে পুজোর আগে ব্যাহত সাধারণ জনজীবন। তবে এর মধ্যে বাড়তি আশঙ্কা সাপের উপদ্রব। স্বাভাবিকভাবে ভয়ের পরিবেশে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের।

টানা বেশ কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এবং বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ঘাটালে। আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেলেও এখনও দুর্যোগ কাটেনি। এলাকা এখনও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে।। চলাচলের রাস্তায় মানুষের ভরসা নৌকা। একদিকে যখন চরম উদ্বেগে দিন কাটছে তখনই তাদের মাথার উপর নতুন করে আতঙ্ক সাপের। ইতিমধ্যে একাধিক জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে বিষাক্ত সাপ। বিভিন্ন এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। স্বাভাবিকভাবে এমন পরিস্থিতিতে রাত এবং দিন কাটছে উৎকণ্ঠায়।

আরও পড়ুন: জিতাষ্টমীতে মেতে উঠবে গোটা মানভুম, চলছে টুকি ও ডালা তৈরির প্রস্তুতি

প্রসঙ্গত টানা বৃষ্টিতে, জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে ঘাটালের বিভিন্ন জায়গা। ঘাটাল থানার সামনে প্রায় গলা সমান জল। প্রতিদিন প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করছেন প্রশাসনের একাধিক আধিকারিকেরা। নিয়মিত মনিটারিং করছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসকও। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বন্যার্ত মানুষদের কাছে ত্রান পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তবে সোমবার থেকে জেলা জুড়ে ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে। একদিকে এখনও জল নামেনি অন্যদিকে ফের আবহাওয়া প্রতিকূল হলে বাঁচা দায় হয়ে উঠবে ঘাটালের মানুষজনের। ইতিমধ্যে এলাকায় স্বাস্থ্য ক্যাম্প বসানো হয়েছে। নৌকায় করে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। স্বাভাবিকভাবে শুধু জেলা নয় জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যজুড়ে চর্চায় ঘাটালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি।

রঞ্জন চন্দ

Flood Situation: ভয়ঙ্কর…! সব যেন গিলে খাচ্ছে! মর্মান্তিক পরিণতি এক ব্যক্তির, ভেসে গেলেন জলের স্রোতে

মালদহ: গঙ্গা ও ফুলহর নদীর জল একইসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি মালদহের ভূতনির। গবাদি পশু পারাপার করার সময় জলের স্রোতে ভেসে গেলেন এক ব্যক্তি। তাঁর খোঁজে গঙ্গাবক্ষে তল্লাশি এনডিআরএফ দলের।

সকালে ভূতনির পুলিনটলা ঢাবের রাস্তা দিয়ে ভেড়া,ছাগল নিয়ে পারাপার হচ্ছিলেন উত্তর চন্ডীপুরের কেদারটোলার বাসিন্দা সৌমেন মন্ডল। সেই সময় রাস্তা দিয়ে জলের স্রোতে জলেশ্বরতে গবাদি পশু-সহ সৌমেন মন্ডল ও তার ছেলে জলে তলিয়ে যায়।

আরও পড়ুন-হুড়মুড়িয়ে কমবে ইলেকট্রিক বিল! ঘর থেকে সরিয়ে ফেলুন ‘এই’ জিনিসগুলি, মাসে বাঁচবে হাজার হাজার টাকা, একলাফে বিদ্যুতের খরচ অর্ধেক!

কোনও রকমে ছেলে প্রাণে বাঁচলেও নিখোঁজ সৌমেন মন্ডল৷ খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছই ভূতনি থানার পুলিশ নামানো হয় এনডিআরএফ দল। কয়েক ঘণ্টা কেটে গেল এখনও খোঁজ মেলেনি ওই ব্যক্তির।

আরও পড়ুন-  বলুন তো, কোন প্রাণীর রক্তের দাম সবচেয়ে বেশি? ৯৯% মানুষই উত্তর দিতে গিয়ে ডাহা ফেল! চমকে দেবে উত্তর, গ্যারান্টি…!

এদিকে গত প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বানভাসি হয়ে রয়েছে মালদহের ভুতনির বিস্তীর্ণ এলাকা। মাঝে কয়েকদিন জল কিছুটা কমলেও গতকাল থেকে ফের হু হু করে বাড়ছে জলস্তর। ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে গঙ্গা ও ফুলাহার নদী। সবমিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়েছেন।

West Bengal flood situation: ফুঁসছে ভাগীরথী, নতুন করে বন্যা পূর্ব বর্ধমানের বহু এলাকায়! বন্ধ হল ফেরি চলাচল

পূর্ব বর্ধমান: ভাগীরথীর জল উপচে ঢুকছে কৃষিজমিতে। ফলে নতুন করে প্লাবিত পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার ভাগীরথী তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা। নদীতে জল বাড়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন। অন্য দিকে দামোদরের জল বাড়ায় প্লাবিত হয়ে রয়েছে জামালপুর রায়নার বেশ কিছু এলাকা।

ভাগীরথীতে বাড়তে শুরু করেছে জলস্তর। চাষের জমি পেরিয়ে সেই জল ঢুকে পড়ছে এলাকায়। নতুন করে প্লাবনের খবর পেয়ে রাতেই এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়লেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের ব্লক অফিসের জরুরি বৈঠক করলেন কালনা মহকুমা শাসক শুভম আগরওয়াল, রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, বিডিও সঞ্জয় সেনাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক-সহ অন্যান্যরা।

আরও পড়ুন: পুজোর আগে আবার নিম্নচাপের আশঙ্কা! রবিবার থেকেই বিপদ দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায়

পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লক অফিসে খোলা হল কন্ট্রোল রুম। সেখানেও হাজির ছিলেন তাঁরা। উল্লেখ্য পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের জালুইডাঙ্গা, কিশোরীগঞ্জ, মনমোহনপুর-সহ বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: আরজি করে ধর্ষণ-খুনে জড়িত নয় সন্দীপ- অভিজিৎ? আদালতে বিস্ফোরক দাবি সিবিআইয়ের

 ভাগীরথী নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল জেলা প্রশাসন। যাত্রীদের  নিরাপত্তার কারণে ভাগীরথী নদীর ওপরে থাকা কাটোয়া বল্লভপাড়া ফেরিঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ আছে। নদীয়া জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্যতম যোগাযোগকারী ফেরিপথ হল বল্লভপাড়া ফেরিঘাট। কাটোয়া বল্লভপাড়া ফেরিঘাট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা সমস্যায় পড়েছে। তবে পরবর্তী ঘোষনা না হওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।

আরও পড়ুন: রান্নার তেলেই লুকিয়ে বিপদ! হার্ট ভাল রাখতে খাবারে এই ৫ তেল একদম ব্যবহার করবেন না

ফেরি ঘাটের কর্মী জানান, ভাগীরথী নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসন  ফেরিঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া নদীর জলে ভেসে আসা কচুরিপানার সঙ্গে গাছের ডালপালা নৌকার মোটরের পাখায় জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এতে ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নৌকা নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। ফেরি ঘাটের কর্মী সোমনাথ ঘোষ বলেন, প্রশাসন নির্দেশ দিলে পুনরায় ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে।

West Bengal Flood Situation: রাস্তায় চলছে নৌকা, আরও সংকটজনক ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি, জলের তলায় দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল

ঘাটাল: আবহাওয়ার উন্নতি হলেও জল বাড়ছে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায়। ফলে দুর্ভোগ অব্যাহত ঘাটাল জুড়ে৷ এমনকি বাজার করার জন্যও নৌকা নিয়ে আসতে হচ্ছে মানুষকে। বাজার এলাকার রাস্তা যেন আস্ত নদী হয়ে গিয়েছে৷ জল ঢুকেছে চন্দ্রকোণা, দাসপুর-সহ বিভিন্ন ব্লক এলাকায়। জলের প্রবল স্রোত চলছে রাস্তার উপর দিয়ে। নদী ও রাস্তার মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল হয়ে উঠেছে৷ এই অবস্থায় পানীয় জলের সমস্যাও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, ভেঙে পড়েছে এখানকার একাধিক মাটির ঘর। যার জেরে দুর্ভোগে এলাকার সাধারণ মানুষ৷

Bangla Video: অসময়ে বৃষ্টি ব্যাপক চিন্তায় ফেলে দিয়েছে কৃষকদের, দেখুন

পশ্চিম বর্ধমান : নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টিতে জল থই-থই অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের। তার মধ্যেই ডিভিসির ছাড়া জলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। বহু ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছে। বহু মানুষ আশ্রয় হারিয়েছেন। চরম সমস্যায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। এই ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরাও।

কৃষকরা বলছেন, অসময়ে বৃষ্টিপাত তাদের সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। বহু জমি টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। যদিও জল নামতে শুরু করেছে।।কিন্তু তাদের চিন্তা কমছে না। কারণ এই ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে জমিতে দেওয়া কীটনাশক নষ্ট হয়েছে। ফলে নতুন করে আবার তাদের কীটনাশক দিতে হবে। দিতে হবে সার। তাছাড়াও ফসল উঠতে দেরি হবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

আরও পড়ুন: কমছে না হাতি মানুষ দ্বন্দ্ব! গত এক মাসে মৃত তিন

তারা বলছেন, এখনও বেশ কিছু জমি জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। সেই জমিগুলি থেকে জল নামেনি। অথচ ধান অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় জমিতে জল জমে থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে কৃষকদের বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এমনিতেই অসময়ের বৃষ্টিপাতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। ফসল তুলতেও দেরি হবে। যে কারণে শীতকালীন চাষ করতে গিয়েও সমস্যায় করতে হবে সমস্ত কৃষকদের।

একদিকে যখন দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বন্যা পরিস্থিতির কারণে বহু মানুষ আশ্রয় হারিয়েছেন, বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকতে হচ্ছে, তেমন সময় কৃষি জমিগুলিও জলের তলায়। যা খুব স্বাভাবিকভাবে কৃষকদের বড় চিন্তার মধ্যে ফেলেছে। তারা বলছেন, যদি সময় বৃষ্টি হত, তাহলে কৃষকদের কৃষি কাজে সুবিধা হত। কিন্তু অসময়ে বৃষ্টিপাত তাদের বিপদের মধ্যে ফেলেছে। দ্রুত জমিগুলি থেকে জল নামানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। কারণ জমি জলমগ্ন হয়ে থাকলে ফসলের সিকিভাগও তারা ঘরে তুলতে পারবেন না।

নয়ন ঘোষ