Tag Archives: Flood Situation

Dam Broke Flood: বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর, হু হু করে ঢুকেছে নোনা জল

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল গোবর্ধনপুর। ফলে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবর্ধনপুর গ্রামের দক্ষিণে প্রায় ১২০০ মিটার বাঁধ ভেঙেছে। গ্রামের দক্ষিণেই রয়েছে বঙ্গোপোসাগর। ওই অংশে কোনও চর না থাকায় ঢেউগুলি সজোরে আছড়ে পড়ে বাঁধে। যার জেরে প্লাবিত হয়েছে পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর গ্রাম।

নোনা জল ঢুকে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শতাধিক বাড়ি। কয়েকশো বিঘা জমিও নোনা জলে প্লাবিত হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে আর কৃষিকাজ করা যাবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক দাস বলেন, বারবার এমন ঘটনা ঘটায় আতঙ্কিত সকলে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁদের মত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো উচিৎ বলে জানান। জল কবে নামবে তাও বুঝতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। পুকুরে নোনা জল ঢুকে মাছ মারা গিয়েছে। বিপদ এড়াতে প্রায় একশোটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আর‌ও পড়ুন: ক্লাসরুমকে গুদামঘর বানিয়ে স্কুলেই ব্যবসা শিক্ষিকার, নিরুপায় পড়ুয়াদের ঠাঁই বারান্দায়

পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীরকুমার জানা বলেন, গোবর্ধনপুরের দক্ষিণ অংশে বহুবার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ওই এলাকায় সমুদ্রের ঢেউয়ের দাপট থাকায় বার বার বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙা বাঁধের কিছুটা দূরে ফের কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন জল নামার অপেক্ষায় রয়েছেন গ্রামবাসীরা।

নবাব মল্লিক

Flood Situation: ভুটানে টানা বৃষ্টিতে বিপন্ন কালচিনি, ক্রমশ ভয় বাড়ছে

আলিপুরদুয়ার: ভুটান পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টির জেরে জটিল পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গের একাংশে। বেড়েছে পানা নদীর জল। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা বাড়ছে। তবুও একপ্রকার বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই নদী পাড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করছেন স্থানীয় রাধারানি, চুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দারা।

কালচিনি ব্লক দিয়ে বয়ে চলেছে পানা নদী। চুয়াপাড়া, রাধারানি এলাকা রয়েছে পানা নদীর পাশে। বর্ষা এলেই সমস্যা বাড়ে এই এলাকাগুলিতে। টানা বৃষ্টিতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে এই নদীর। ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টির ফলে পানা নদীর জল ফুলে ফেঁপে উঠেছে। যদিও এক ঘণ্টা বৃষ্টি না হলে কোমর সমান জল নিয়ে এই নদী পারাপার করেন বাসিন্দারা। পানা নদী পাড় করতে গিয়ে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন গাড়ি চলকেরা। গাড়ি নদী দিয়ে নিয়ে যেতে গেলেই খারাপ হচ্ছে যন্ত্রাংশ। কিন্তু শুকনো দিনে নদীর কোনও অস্তিত্ব‌ই দেখা যায় না এই এলাকায়।

আর‌ও পড়ুন: নজরদারিতে কি কিছুটা কমল দাম? সবজি বাজার নিয়ে কী বলছেন ক্রেতা থেকে বিক্রেতারা

পানা নদীর উপর আগে থেকে কোনও সেতু ছিল না। কিন্তু এই বর্ষায় লাগাতার বৃষ্টির জেরে নদীর জল গ্রামগুলিতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বর্তমানে স্থানীয়রা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কোনওক্রমে খরস্রোতা নদীটি পারাপার করছেন। পানা নদীর জল বাড়লেই সংলগ্ন এলাকাগুলির প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা সমস্যায় পড়েন। কেন না সমস্ত রসদ যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

অনন্যা দে

Malda Flood Situation: বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই মহানন্দা, বন্যা পরিস্থিতি মালদহে

মালদহ: বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই মহানন্দা নদীর জল। টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরাল হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই মালদহে মহানন্দা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু বাড়িতে জল ঢোকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনও মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে সারি সারি কয়েকশো বাড়ি। দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক আর প্রাণভয় নিয়েই এখনও কিছু পরিবার বসবাস করছে।

এই অবস্থায় অনেকেই বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন। শহরের উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে নদী তীরবর্তী বস্তি এলাকার বাসিন্দারা। বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দা কৌশিক সরকার বলেন, প্রতিবছর নদীর জল বাড়লেই এমন পরিস্থিতি হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন‌ও স্থায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। চারিদিক জলমগ্ন হয়ে পড়ায় পোকামাকড়, সাপের উপদ্রব বাড়ছে। সব মিলিয়ে আতঙ্কে আছে মানুষ।

আর‌ও পড়ুন: টানা বর্ষণে উত্তাল তোর্ষা! চা বাগানে হু হু করে ঢুকছে নদীর জল

এই পরিস্থিতিতে ইংরেজবাজার পুরসভার পক্ষ থেকে বন্যা কবলিতদের জন্য সুব্যবস্থা করা হচ্ছে। শহরে নব নির্মিত ফ্লাড সেন্টার দ্রুত চালু করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য পাহাড়ে টানা বৃষ্টি এবং মালদহেও কয়েকদিনের বৃষ্টি জেরে মহানন্দার জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। নদীর জলে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা ইংরেজবাজার পুরসভার ৮, ৯, ১২ এবং ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহানন্দা নদীর চরে বসবাসকারী কয়েকশো বাড়ি। কারোর বাড়ির ভেতর, আবার কারোর বাড়ির উঠোনে এসে পৌঁছেছে জল। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে এসেছে বাধ্য হচ্ছেন। ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর বন্যা কবলিতদের জন্য সুব্যবস্থা করা হয়। এই বছর নতুন ফ্ল্যাড সেন্টার তৈরি হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বৃষ্টিতে মালদহে মহানন্দার জল অনেকটাই বেড়েছে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মহানন্দা নদীর জলস্তর রয়েছে ২০.১০ মিটার। বিপদসীমার কিছুটা নীচে রয়েছে জলস্তর। জলস্তর নিয়মিত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কোন‌ও মুহূর্তে বিপদসীমা পার হতে পারে জলস্তর। এরফলে মালদহে মহানন্দার জলেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

হরষিত সিংহ

North Bengal Flood Situation: টানা বর্ষণে উত্তাল তোর্ষা! চা বাগানে হু হু করে ঢুকছে নদীর জল

আলিপুরদুয়ার: গত দু’সপ্তাহের একনাগারে বৃষ্টিতে ফুঁসছে তোর্ষা নদী। জলস্তর এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে তা আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয়দের। ইতিমধ্যে কূল ছাপিয়ে তোষা্র জল ঢুকতে শুরু করেছে বিচ চা বাগানে। ভাঙছে বাগানের জমি।

টানা বৃষ্টিতে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায়। ভিটেমাটি হারানোর ভয়ে রাতের ঘুম উড়েছে বিচ চা বাগানের ফরেস্ট লাইনের বাসিন্দাদের। এই এলাকার পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে খরস্রোতা তোর্ষা নদী। এই নদীতেই এসে মিলিত হয় ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীর জলও। ফলে প্রতি বর্ষাতেই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে তোর্ষা।

আর‌ও পড়ুন: আফগানি রাবাব-এর টানে ছেড়েছেন চাকরি! সেই বাদ্যযন্ত্র এখন অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা মাতাচ্ছে

ইতিমধ্যেই, এলাকার কয়েকশো মিটার জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বিচ চা বাগানের এই ফরেস্ট লাইন এলাকায় ১৫০ পরিবারের বাস। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরানো হয়ে উঠেছে যে শীঘ্রই প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ না নিলে হয়ত গোটা এলকাটাই ধীরে ধীরে তোর্ষায় তলিয়ে যাবে। এই আশঙ্কার কথা নিজেদের মুখে চালিয়েছে সেখানকার বাসিন্দারা। এই ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি স্নিগ্ধা শৈব। তিনি এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। এই বিষয়ে সভাধিপতি বলেন, নদীতে অনেকটা জল রয়েছে। এই মুহূর্তে নদীতে কাজ করা সম্ভব নয়। তবে বিকল্প উপায়ে কীভাবে বাসিন্দাদের সমস্যা সমাধান করা যায় তা দেখছি।

আগেই সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগান ভাঙনের কবলে পড়েছিল। এবার বিচ চা বাগানে একই পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় চা বাগানে শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমত আশঙ্কিত বাগান মালিকরা।

অনন্যা দে

Alipurduar News: মুহূর্তে ভেঙে গেল ১৬টি বাড়ি! ভয়াবহ পরিস্থিতি কালচিনিতে, জানুন বিস্তারিত

আলিপুরদুয়ার: বৃষ্টি যেন পিছু ছাড়ছে না কালচিনির। আলিপুরদুয়ারে কালচিনি মালি লাইন এলাকায় ১০টি পাকা বাড়ি ধসে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রশাসনিক সাহায্য না পেয়ে এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ছাড়ছেন বাড়িঘর।

বন্যা পরিস্থিতি একই রয়ে গিয়েছে কালচিনি এলাকায়। এই এলাকার ১০০-১৫০ বাসিন্দা ঘরছাড়া ৷ অনেকেই ইতিমধ্যে তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গিয়েছেন। প্রবল বৃষ্টির জেরে বুধবার থেকে বন্যা পরিস্থিতি কালচিনিতে। জলে ডুবে রয়েছে গোটা এলাকা। গুদাম লাইন এলাকায় ছয়টি পাকা বাড়ি ধ্বসে যেতে বসেছে। আর মালি লাইন এলাকায় দশটি বাড়ি ধসে যাচ্ছে।

এদিকে প্রশাসনের তরফে কোন সহযোগিতা না মেলায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। বুধবার থেকে তারা না খাওয়া। এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায়। আলিপুরদুয়ার জেলার সর্বত্র বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে জলমগ্ন আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক এলাকা। বৃষ্টিতে জলের প্রবল স্রোতে ধ্বসে যাচ্ছে কালচিনি মালি লাইন এলাকার বেশ কয়েকটি পাকা বাড়ি। যেকোনো মুহূর্তে পড়ে যেতে পারে। বাড়ি ছেড়ে দিয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার।

আরও পড়ুনঃ Alipurduar News: হঠাৎ বাড়ির বাইরে তাণ্ডব! মুহূর্তে পুরো বাড়ি তছনছ, আতঙ্কে গোটা পরিবার

বাসিন্দারা জানান ভাঙ্গনের জেরে এলাকার ছয়জন বাসিন্দাদের ঘর ভেসে যাচ্ছে, যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, বাড়ি বাঁচানোর কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন। এদিকে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি স্নিগ্ধা শৈব দেখে গিয়েছেন এলাকা। তিনি জানিয়েছেন,”জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে বন্যা দুর্গতদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে।” তার মতে চা বাগান থেকে জল চলে এসে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

Annanya Dey

Flood Situation: টানা বৃষ্টিতে বানভাসি, ৯৩-এর বন্যার স্মৃতি ফিরল হ্যামিল্টনগঞ্জে

আলিপুরদুয়ার: ১৯৯৩ সালের বন্যার স্মৃতি ফিরে এল আলিপুরদুয়ার জেলার হ্যামিল্টনগঞ্জের বাসিন্দাদের মনে। টানা ভারী বর্ষণে বানভাসি গোটা এলাকা। ফলে প্রবল আতঙ্কিত বাসিন্দারা। এবারও কি বন্যার কবলে পড়তে হবে? বর্তমানে এই প্রশ্নটা ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের মনে।

টানা বৃষ্টির কারণে জলে ডুবে রয়েছে হামিল্টনগঞ্জ। প্রধান সড়কের উপর দিয়ে বইছে জল। যার কারণে আলিপুরদুয়ার শহরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে হ্যামিল্টনগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থা। জলমগ্ন হ্যামিল্টনগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। প্রবল বর্ষণ ও বেহাল নিকাশি দরুণ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। মানুষজনের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান সড়কে প্রায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে।

আরও পড়ুন: দিঘার রাস্তায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, মৃত ২, আশঙ্কাজনক আরও ২

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিকাশি ব্যবস্থা একদম ভেঙে পড়েছে। অল্প বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে জমা জল ঢুকতে শুরু করেছে। প্রশাসনিকভাবে কোন‌ঝ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। হ্যামিল্টনগঞ্জে রয়েছে অগ্নি নির্বাপক কেন্দ্র। প্রধান রাস্তার উপর দিয়ে এমন জল বইছে যে কোথাও আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি পৌঁছতে পারবে না সেই এলাকায়। এক কথায় গৃহবন্দীএ এখানকার মানুষজন।

কোথা থেকে এত জল এলাকায় প্রবেশ করছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না স্থানীয়রা। এদিকে বাসরা নদীর জল উপচে পড়ছে। সব মিলিয়ে ১৯৯৩ সালের ভয়াবহ বন্যার স্মৃতি উঁকি মারছে একটু বেশি বয়স্কদের মনে। সেই সময় মৃত্যু মিছিল দেখা গিয়েছিল এলাকায়। ক্ষতি হয়েছিল বাড়ি ঘরের। সেই দুঃসহ স্মৃতি যাতে আর না ফেরে সেটাই এখন সকলের একমাত্র প্রার্থনা।

অনন্যা দে

Farmers Crisis: বিএসএফ কালভার্ট বন্ধ রাখায় বাংলাদেশ সীমান্তে মারাত্মক ক্ষতি চাষিদের!

উত্তর দিনাজপুর: লাগাতার কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন উত্তরবঙ্গের বহু এলাকা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকাপুর অঞ্চলের গোটগাও, উদগ্রাম, রাধিকাপুর এলাকার কয়েকশো বিঘা জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষকরা।

এই এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারনে আনুমানিক দুই হাজার একর ধান জমি জলে ডুবে গিয়েছে। ফলে মাথায় হাত রাধিকাপুরের ধান চাষিদের। বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা গোটগাও-এর ধান চাষি মোজাফফর হোসেন বলেন, ধানি জমি বৃষ্টির জলে গত সাতদিন ধরে ডুবে থাকায় চাষাবাদ করতে পারছেন না। তাদের অভিযোগ, পাশে বিএসএফ-এর কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে যেখান দিয়ে জল পাস হয় সেই জল যাওয়ার জায়গা বিএসএফ জ‌ওয়ানরা বন্ধ করে রেখেছেন।

আরও পড়ুন: পাচারের আগেই উদ্ধার বহুমূল্যের কাঠ

এই পরিস্থিতিতে এখানকার চাষিদের জমির জল কোন‌ও দিক দিয়েই বের হতে পারছে না। জল বের না হওয়ার কারণে তাঁদের জমিতে ধানের রোঁয়া লাগাতেও পারছেন না। ফলে জমিতে ধান লাগানোর ক্ষেত্রে তাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন। টাঙ্গন নদীর জল যেভাবে প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে যেকোনও সময় দুকূল ছাপিয়ে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে। আর তাহলে চাষিরা ভিটেমাটি হারা হবেন বলেও আশঙ্কা।

এই ব্যাপারে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নিতাই বৈশ্য বলেন, জমিতে দীর্ঘদিন ধরে জল জমে থাকায় সমস্যা পড়ছেন এলাকার কৃষকরা।রাধিকাপুরে বিএসএফ জ‌ওয়ানরা রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া কালভার্টগুলি বন্ধ করে রাখায় চাষের জমিতে জমা জল বের হতে পারছে না। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসন আলোচনার ভিত্তিতে জরুরি সমাধান সূত্র বের করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।

পিয়া গুপ্তা

Flood Situation: লাগাতার বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি জেলায়, বাঁধহীন এলাকায় আতঙ্ক

দক্ষিণ দিনাজপুর: গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুনর্ভবা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তপন ব্লকের বজ্রাপুকুর, বাসইর, সুথল, জিগাতলী, গোপীনাথপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকাতে নদীর জল প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এভাবে যদি আর কয়েক ঘন্টা বৃষ্টি হয় তবে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়বেন।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকা জুড়ে বাঁধ নির্মাণের কথা স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ-এর কাছেও একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি আজও। নদীর জল বাড়লেই রীতিমত আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়, এমনকি অন্যান্য এলাকা থেকে এই ১০-১২টি গ্রাম একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: আম চিনতে পড়ুয়াদের জন্য আমের মেলা! উপভোগ করল কচিকাঁচারা

স্থানীয় গ্রামবাসী মোহন বর্মন বলেন, প্রায় প্রতি বছর বন্যা পরিস্থিতির শিকার প্রত্যেকে। যেভাবে নদীতে জল বাড়ছে একদিনের মধ্যে বাড়িতে জল ঢুকে যেতে পারে। এই এলাকায় নদী বাঁধ দেওয়া হলে খুব ভাল হয়। বাড়িতে জল ঢুকে গেলে কোথায় গিয়ে উঠতে হবে তা জানা নেই। পাড়ায় বেশিরভাগই মাটির বাড়ি। সরকারি বাড়ি পেলে হয়ত ঘর ছাড়তে হত না।

রাতভর বৃষ্টি হলে এলাকার লোকজনের বাড়িতেও জল ঢুকে পড়বে, তা নিয়েআতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়। এদিকে সকাল থেকে নদীর এমন জলস্তর বৃদ্ধির ফলে জলে ডুবে যেতে থাকে এলাকার কৃষিজ ফসল। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। পুনর্ভবা নদীর ধার দিয়ে বাঁধ নির্মাণ না করার ফলে প্রতিবছরই বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে বন্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

সুস্মিতা গোস্বামী

Flood Situation: অগ্রাসী তিস্তার জলে ভাসছে টোটগাঁও বস্তি, আশ্রয় শিবিরে প্রায় গোটা গ্রাম

জলপাইগুড়ি: পাহাড় এবং সমতলে অবিরাম ভারী বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে তিস্তা নদী। বেশ কিছু জায়গা প্লাবন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত মালবাজার মহকুমার টোটগাঁও গ্রাম। তিস্তা নদী ধীরে ধীরে গ্রাস করছে এই গ্রামকে। বৃষ্টি যত বাড়ছে আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিস্তার জল ঢুকে এই এলাকার প্রায় ৫০-এর বেশি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তিস্তার হড়পা বানে নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে কোথায় রাস্তা আর কোথায় কৃষি জমি দেখে বোঝার উপায় নেই। গ্রামে ঢোকার রাস্তা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই জলমগ্ন। নষ্ট হয়েছে জমির ফসল।

আরও পড়ুন: বাঁধের জন্য জমি দিলেও ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত দক্ষিণ কনকদিঘির মানুষ

প্রতিবছর বর্ষা এলেই এই এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ে। তবে এই বছর পরিস্থিতি যেন আরও বেশি খারাপ। আগে যেদিক দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে যেত সেখান থেকে ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। বর্ষার শুরু থেকেই এই এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। তিস্তার ভয়াল রূপ দেখে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। নিজেদের সম্বলটুকু নিয়ে বর্তমানে আশ্রয় নিয়েছে ত্রান শিবিরে। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে টোটগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, গবাদি পশু সহ প্রায় সবকিছু নিয়েই আশ্রয় নিয়েছে বহু পরিবার।

ঘরে উনুন জ্বালানোর পরিস্থিতি নেই, তাই ত্রাণ শিবিরের খাবার খেয়ে খিদে মেটাচ্ছেন সকলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও এই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করেনি। বাঁধ থাকলে আজ এই পরিস্থিতি হত না। বর্তমানে নদী যেভাবে গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে ভবিষ্যতে এর থেকেও আর‌ও বেশি ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে। সমগ্র গ্রামটাই চলে যেতে পারে তিস্তার গর্ভে, এমনটাই আশঙ্কা গ্রামবাসীদের। সকলে চাইছেন এই বিপদ থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পেতে এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করুক প্রশাসন।

সুরজিৎ দে

Continuous Rain: টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি নদীর বাঁধ ভেঙে ভাসছে ডুয়ার্স

জলপাইগুড়ি: ফের জলমগ্ন ডুয়ার্স। পাহাড়ে বর্ষার টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল সমতলে। পাহাড় থেকে নেমে আসা জলে ভাসছে ডুয়ার্স। চরম দুর্ভোগের মুখে জলপাইগুড়ির মানুষ।

আবহাওয়া দফতরের আগাম পূর্বাভাস অনুযায়ী গত শনিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টি হয়ে চলেছে সমতল ও পাহাড় জুড়ে। স্বাভাবিকভাবেই ফুঁসছে তিস্তা, করলা, জলঢাকা সহ উত্তরবঙ্গের সব কটি পাহাড়ি নদী। এদিন লিস নদীর বাঁধ ভেঙে জলপাইগুড়ির অন্তর্গত চান্দা কলোনির বাড়িঘর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিপর্যয় মোকাবিলা টিম উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে মালবাজারেও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। কার্যত ভয়ে ভয়ে দিন কাটছে সেখানকার বাসিন্দাদের। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অনেকেই জাতীয় সড়কের উপর এসে দাঁড়িয়েছেন।

আর‌ও পড়ুন: একটানা বৃষ্টিতে বানভাসি কুমারগ্রাম, রাতের ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের

একেই নদীর গতিপথের পরিবর্তন অন্যদিকে, তিস্তার বুকে পলি জমে উঁচু হয়ে গিয়েছে নদীখাত। স্বাভাবিকভাবেই সব মিলে বিপদ সীমা ছুঁয়ে বইছে তিস্তা নদীর জল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। কয়েকটি পকলিং মেসিন ও জেসিবি মেসিনের সাহায্যে চ্যানেল কেটে নদীর গতিপথ ঘুরিয়ে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বাঁধের ভাঙা অংশে লোহার জাল ও পাথর দিয়ে দ্রুত গতিতে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বাগরাকোট অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি রাজেশ ছেত্রী জানান, নদীর গতিপথ মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। দরকার হলে আরও জেসিবি নামানো হবে।

রাতভর পাহাড় ও সমতল জুড়ে নাগাড়ে বৃষ্টি চলায় পাহাড়ের লিস, ঘিস সহ বিভিন্ন নদীর মধ্য জলধারা দিয়ে সমতল অভিমুখে নেমে আসছে। এতেই লিস নদীতে জলস্ফীতি দেখা দেয়। প্রবল জলস্রোতের ধাক্কায় লিস নদীর জাতীয় সড়ক ও রেললাইনের মাঝে থাকা গাইড বাঁধের প্রায় ২০-২৫ মিটার অংশ ভেঙে মঙ্গলবার সকালে জলস্রোত ঢুকে পড়ে চান্দা কলোনিতে। জাতীয় সড়কের পাশে জল জমে সড়ক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেয়। অন্যদিকে, তিস্তা নদীর জলোচ্ছাসে আবারও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে মাল ব্লকের টটগাঁও বস্তি।

সুরজিৎ দে