জলপাইগুড়ি- আবাস ইস্যুতে ফের কেন্দ্রের বিজেপিকে রাজনৈতিক আক্রমণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যদি বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র বাংলার বকেয়া আবাসের টাকা দিত, তাহলে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হত না; এই ক্ষতির দায়ভার বিজেপির উপরই বর্তায়’৷ প্রসঙ্গত উত্তরবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ে একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত৷ বহু মানুষ আহত৷ আর এই বাড়ি হারানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়েই তোপ দেগেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে৷
আরও পড়ুনঃ কোচবিহার জেলা নিয়ে আজ কৌশলী বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা মুখে গ্যারান্টির কথা বলছেন, তাঁরা আসলে ২,০০০ কিলোমিটার দূরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্যারান্টি পোস্ট করছেন। তাঁদের কাজের গ্যারান্টি পাওয়া যায় শুধু টুইটে। আমাদের গ্যারান্টি মানুষের জীবন রক্ষা করে, তাঁদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করে এবং তাঁরা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন, তা নিশ্চিত করে। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্যারান্টি। এটাই পার্থক্য।’
তিনি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখে আসেন। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন, ‘সেই প্রসঙ্গে বলেন, মানুষ এখন শর্ত নিয়ে আসছেন। আমি সকলকে আবেদন করতে চাই, সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ ভুলে আপাতত আগামী ৪৮ ঘণ্টা মানুষের পাশে দাঁড়ান। আমাদের আশা, যত দূর আমাদের পক্ষে সম্ভব আক্রান্তদের সাহায্য করা হবে। তিনি যোগ করেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কারও আয়ত্তে থাকে না। ওই বিধ্বংসী ঝড় ও বৃষ্টি, বিরাট এলাকাজুড়ে ক্ষয়ক্ষতি করেছে। বহু জায়গায় চাষের জমি, ফসল ও বসত নষ্ট হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে, প্রায় ১,৫০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারজনের মৃত্যু হয়েছে আরও দু’জন গুরুতর জখম হয়েছে। আহত এই দু’জন শিশু ও নাবালক। প্রথমজনের বয়স মাত্র ২ বছর। দ্বিতীয়জন ১৪ বছরের। তাদের চিকিৎসা চলছে।’
অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘আমফান এবং ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে ভোর ৪টে-৫টা পর্যন্ত জেগে বসেছিলেন। মানুষের জীবন বাঁচাতে নিজে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করেছিলেন। কীভাবে প্রতিশ্রুতি পালন করতে হয় এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে ও মানুষের সেবা করতে হয়, সেই বিষয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। আমি এটা নিয়ে কোনও রাজনীতি করতে চাই না, কিন্তু, যাঁরা এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন, তাঁদের বলব যে আপনারা মানুষের পাশে দাঁড়ান। জনসভা, মিছিলের মতো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তো চলবেই। কিন্তু, সেগুলি দু-তিনদিন পরও হতে পারে।’
রাজনৈতিক তোপ দাগতে গিয়ে তিনি বলেন, যে বিজেপি নেতারা মুখে নানা গ্যারান্টির কথা বলছেন, ‘সঠিক সময়ের মধ্যে জলপাইগুড়ি পৌঁছতেই পারছেন না। এর থেকেই প্রমাণিত, ওঁরা শুধু রাজনীতি করছেন, উদ্ধারকাজ করছেন না। যাঁরা মানুষের সেবা করার বদলে কেবলমাত্র ছবি তোলার জন্য আজ এসেছিলেন, তাঁরা কী করলেন? গত পাঁচবছরে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের সাংসদরা কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেছেন? তাঁরা করেননি।’ পালটা কটাক্ষ অবশ্য করেছে বিজেপি শিবির। দূর্নীতির অভিযোগ তুলে ফের সরব হয়েছে বিজেপি শিবির।