বীরভূম: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রাঙামাটির জেলা বীরভূম। আর এই রাঙামাটির জেলার প্রাণের শহর শান্তিনিকেতন। এই শান্তিনিকেতনে হওয়া বিশ্বভারতীর বসন্ত উৎসব অতি বিখ্যাত। প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অবসর নেওয়ার পর এই বছর অনেকেই মনে করেছিল পৌষ মেলা এবং দোল উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হবে। কিন্তু দেখা যায় বিকল্প পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলার বদলে। অন্যদিকে দোল উৎসব পালিত হয়নি শান্তিনিকেতনে। এর পরিবর্তে দোল উৎসব পালিত হয় সোনাঝুড়ির হাটে।
আরও পড়ুন: প্রচারের ফাঁকে পুরনো পেশায় ফিরে গেলেন তৃণমূল প্রার্থী
এবারেও দোলের দিন বসন্তোৎসব করেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। প্রথা ভেঙে বসন্তোৎসবের বদলে বুধবার বিশ্বভারতীতে অনুষ্ঠিত হয় বসন্ত বন্দনা। উপাচার্য, সমস্ত ভবনের অধ্যক্ষ, রেজিস্টার, কর্মী মণ্ডলী ও কর্মী সংঘের সদস্যরা ছাড়াও পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করে। বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিক, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়। তবে এবছর অনুষ্ঠানের শেষে ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও, যাও গো এবার যাবার আগে’ সংগীত ও নৃত্য পরিবেশিত হলেও ছিল না কোনও আবির বা রং খেলা। তার পরিবর্তে ফুল দিয়ে নৃত্যটি সম্পন্ন হয়। রাত্রে অবশ্য শ্যামা নৃত্যনাট্যের অনুষ্ঠান হয়। তবে এই অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক ও বহিরাগতদের প্রবেশধিকার ছিল না। কর্তৃপক্ষের এই আচরণে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।
সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশ্বভারতীর বসন্ত উৎসব ও পৌষমেলা দেশ-বিদেশের পর্যটক সহ রাজ্যের প্রত্যেকের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। অথচ ২০১৯ সালের পর বসন্ত উৎসব বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হবার পরেও পরিবর্তন হয়নি কোনও কিছুরই। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি,সদ্য ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্বীকৃতি পাওয়ার পর আশ্রম চত্বরে কোনওভাবেই লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে বসন্তোৎসব সম্ভব নয়। তাই ভিড় আটকাতে বসন্ত বন্দনার আয়োজন। যদিও স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবীণ আশ্রমিকদের মত, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতী বলতে কখনও শুধু ছাত্র ও শিক্ষকদের বুঝতেন না। তিনি বিশ্বভারতীর সব অনুষ্ঠানে এখানকার বাসিন্দাদেরও যুক্ত করতেন। তাঁর ভাবধারায় আকৃষ্ট হতেন সকলেই।
সৌভিক রায়