শাকভাত বা শাকান্ন একদিকে যেমন সাশ্রয়ী, অন্যদিকে তেমনই পুষ্টিকর খাবার। প্রতি শাকে রয়েছে বহু পুষ্টিমূল্য। সেরকমই একটি সুপারফুড লালশাক।
ভাতে এই শাক মাখলেই টুকটুকে লাল হয়ে যায় রং। সুস্বাদু এই শাক অত্যন্ত উপকারী। তবে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও আছে। বলছেন পুষ্টিবিদ মনপ্রীত কালরা।
একাধিক ভিটামিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজে ভরপুর লাল শাক হজমে সাহায্য করে। বদহজম-সহ একাধিক সমস্যা দূর করে।
ডায়াবেটিসে খুবই উপকারী লাল শাক। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী কফ ও পিত্ত দোষ দূর করে এই শাক। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর লালশাক হাড়ের স্বাস্থ্য অটুট রাখে। হাড়ের একাধিক রোগের আশঙ্কা দূর করে।
হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে লাল শাকের গুণ। নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের আশঙ্কা। রক্তাল্পতা অসুখেও উপকারী এই শাক।
তবে এত উপকারী লালশাকেরও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দেয় এই শাক। তাই যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতা বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া আছে তাঁরা এটা খাবেন না।
লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন কে আছে। তাই যাঁরা অ্যান্টি কোয়াগুল্যান্টস নিচ্ছেন তাঁরা এই শাক খাবেন না। কারণ ড্রাগ মেটাবলিজমে সমস্যা হতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্যোজাত মায়েরাও এই শাক ডায়েটে রাখবেন না।
পুষ্টিকর খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেয়ে মেটাবলিজম রেট বৃদ্ধি এবং অবাঞ্ছিত মেদ ঝরিয়ে ফেলা রোগা হওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ফাইবার ও অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরা কিছু কালো খাবার ডায়েটে রাখতেই হবে। বলছেন পুষ্টিবিদ অবনী কৌল।
পুষ্টিগুণের আধার কালো বিনসে প্রোটিন, ফাইবার বেশি। ফ্যাট নামমাত্র। এই প্রোটিন মাসল গঠন করতে সাহায্য করে। ক্যালরি খরচ করতে সাহায্য করে।
কালো বিনস দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরতি রাখে। ঘন ঘন খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমে। ধীরে ধীরে হজম হয় বলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না।
কালো চালে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট আছে। ইনফ্লেম্যাশন কমিয়ে ওজন হ্রাসে সাহায্য করে ফাইবারে ভরা এই চাল। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকা এই শস্য।
ওজন কমাতে কালোজাম অবশ্যই খান। এতে ফাইবার কম। হজমে সাহায্য করে। দীর্ঘ ক্ষণ পেটে থাকে এই খাবার। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, ইনফ্লেম্যাশন কমাবে এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
ছোট্ট চিয়াবীজ গুণের আধার। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন-সহ অন্যান্য উপকারিতা আছে এই বীজে। মেটাবলিজম বাড়িয়ে এই দানা বাড়তি ওজন কমিয়ে রোগা হতে সাহায্য করে।
তলপেট এমন একটা জায়গা, যেখানে সহজেই মেদ জমে যায়৷ কিন্তু সেখান থেকে মেদ গলতে সময় লাগে অনেক৷ তলপেটের মেদ সৌন্দর্য এবং স্বাস্থ্য-দু’য়ের জন্যই ক্ষতিকর৷
ফলমূল এবং শাকসবজি থেকে তৈরি কিছু স্বাস্থ্যকর রসের কথা জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ শালিনী সুধাকর৷ তাঁর মতে এই পুষ্টিকর রস ডায়েটে রাখলে তলপেটের অবাঞ্ছিত মেদ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে৷
পালংশাক এবং কেল দুটোই পুষ্টিগুণে ভরপুর৷ এই দুই শাকসবজি থেকে তৈরি রসে ক্যালরি কম, ফাইবার বেশি৷ পালং শাকে প্রচুর আয়রন৷ কেলে জলীয় অংশ বেশি৷ ওজন কমাতে, মেদ ঝরাতে এই দু’রকম রস ডায়েটে রাখুন৷
শশায় জলীয় অংশ ৯৫ শতাংশ৷ কিউয়িতে আছে ভিটামিন সি৷ এই কম্বিনেশনের জন্য এই রস হাল্কা, পুষ্টিমূল্যে ভরা এবং সুস্বাদু৷ তলপেটের নাছোড়বান্দা মেদ কমাতে এই রস খুবই কার্যকর৷
লাউয়ের রসে প্রচুর ফাইবার এবং ক্যালরি কম৷ তলপেটের মেদ ঝরানোর জন্য আদর্শ৷ সুস্বাদু ও ভিটামিন সি-তে ভরপুর করে তোলার জন্য লাউয়ের রসে মেশান আনারস এবং কমলালেবুর রস৷
আমলকির রস ক্ষারকীয় প্রকৃতির৷ হজমে সাহায্য করে এই ফলের রস৷ মেটাবলিজম হার বাড়িয়ে শরীর থেকে টক্সিন দূর করে৷ তলপেটের মেদ কমাতে অবশ্যই খান এই রস৷
গাজরের রসে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ আছে৷ শরীর থেকে সহজেই বর্জ্য বার করে এই আনাজের রস৷ হজম প্রক্রিয়া মসৃণ করে গাজরের রস৷ মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে অবাঞ্ছিত মেদ দূর করতে অবশ্যই পান করুন গাজরের রস৷
ইদানীং লাইফস্টাইল ডিজিজগুলির মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ হাইপার টেনশন বা হাই ব্লাডপ্রেশার। এই মারণরোগ তিলে তিলে ঝাঁঝরা করে দেয় শরীর। ডেকে আনে হার্ট ও কিডনির সমস্যা।
ব্লাড প্রেশার সংক্রান্ত সমস্যা আসতে পারে যে কোনও বয়সেই। নিয়মিত, চেকআপ, ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি মানতে হবে কিছু সহজ নিয়ম। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এই নিয়মগুলি মানলেই বশে থাকবে সমস্যা। বলছেন পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা।
সম্ভব হলে চেষ্টা করুন সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় সুনির্দিষ্ট করতে। তাহলে শরীরের ইন্টারনাল ক্লক সাহায্য করবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ক্রনিক স্ট্রেসও যতটা সম্ভব দূর করুন জীবন থেকে।
দিন শুরু করুন এক গ্লাস জল খেয়ে। ঘুম থেকে উঠে নিজেকে হাইড্রেটেট রাখলে সারা দিন নিয়ন্ত্রিত থাকবে রক্তচাপ। সাধারণ জল খেতে ইচ্ছে না হলে ফ্লেভার্ড ওয়াটারও খেতে পারেন।
ওয়াকিং, জগিং, সাইক্লিং, সুইমিং, অ্যারোবিক্সের মধ্যে কিছু একটা করতেই হবে সকালে। সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট রাখুন শরীরচর্চার জন্য। নিয়মিত শরীরচর্চায় রক্তচাপ কম থাকে।
মানসিক উদ্বেগ ব্লাড প্রেশারের বড় কারণ। তাই ডিপ ব্রিদিং বা মেডিটেশন করুন। স্ট্রেস কমাতে খুবই প্রয়োজনীয় মেডিটেশন।
নিয়মিত চেকআপ, ব্লাড প্রেশার চেক করা, ওষুধ খেতে ভুল না করার পাশাপাশি ক্যাফেইন সেবন নিয়ন্ত্রণও জরুরি ব্লাড প্রেশার সংক্রান্ত সমস্যা এড়াতে।
ব্রেকফাস্ট বা দিনের প্রথম খাবার সুস্থতার জন্য খুব জরুরি। তাই চেষ্টা করুন সুষম আহারে সাজানো ব্যালান্সড ব্রেকফাস্ট করতে।
জ্যৈষ্ঠমাস এমন একটা সময়, যখন বাজারে কাঁচা এবং পাকা-দু’রকমের আমই পাওয়া যায়। পাকা আম মূলত ফল হিসেবেই খাওয়া হয়। কাঁচা আম খাওয়া যায় নানা রেসিপিতে যোগ করে। কোনটা বেশি উপকারী, বলেছেন পুষ্টিবিদ অবনী কৌল।
কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আছে ভিটামিন সি। ফলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি মজবুত হয়। উজ্জ্বল ত্বকের পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং হজমে সাহায্য করে এই ফল।
শর্করার পরিমাণ কম বলে ব্লাড সুগারে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আম বেশি কার্যকর। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে কাঁচা আম।
কাঁচা আমের পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো ইলেক্ট্রোলাইটস সাহায্য করে শরীরের ফ্লুইড ব্যালান্স ঠিক রাখতে। ডিহাইড্রেশন দূর করা, ডিটক্সিফাই করার কাজেও কার্যকর এই ফল।
পাকা আমে প্রচুর ভিটামিন এ আছে। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখার জন্য এটা অত্যন্ত দরকারি উপকরণ। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও ইনফ্লেম্যাশন রোধ করে পাকা আম।
উজ্জ্বল ত্বক, মসৃণ ত্বক দেওয়ার পাশাপাশি চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না পাকা আম। কোলাজেনের যোগান বজায় রেখে ত্বকের টানটান ভাব ধরে রাখে।
কাঁচা না পাকা-কোন আম বেশি উপকারী, সেটা নির্ভর করবে ব্যক্তিবিশেষের স্বাস্থ্যগত বৈশিষ্ট্যের উপর। যদি কেউ বদহজম দূর করতে চান, হাইড্রেশন, ডিটক্সিফিকেশনের জন্য কাঁচা আম সেরা অপশন।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতেও খান কাঁচা আম। কিন্তু ত্বক, চুলের উজ্জ্বলতা, সার্বিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি ও দৃষ্টিশক্তি জোরদার করতে বেশি উপকারী পাকা আম। কারণ এতে একাধিক ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি।
কাঁচা এবং পাকা আম দুটোই উপকারী। তবে খেতে হবে নির্দিষ্ট সমস্যা অনুযায়ী।
ব্যালান্সড ডায়েটের অন্যতম অংশ দুধ। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পর্যন্ত নানাভাবে দুধ খাওয়া যায়। গরুর দুধের পাশাপাশি মোষের দুধও ডায়েটে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই দুয়ের মধ্যে কোনটা বেশি পুষ্টিকর? তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব চলতেই থাকে।
গরু না মোষ-কোন প্রাণিজ দুধের পুষ্টিগুণ বেশি, সুস্থ থাকার জন্য কোনটা ডায়েটে থাকা দরকার, সে বিষয়ে বলেছেন পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা।
গরুর দুধের তুলনায় মোষের দুধে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে পেশিশক্তি তৈরি, শারীরিক বৃদ্ধি এবং সার্বিক সুস্থতায় বেশি কার্যকর হয়। তবে গরুর দুধও প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং একাধিক ভিটামিন ও খনিজে ভরা। হাড়ের সুস্থতায় কার্যকর গরুর দুধ।
মোষের দুধে স্নেহজাতীয় পদার্থও বেশি। ফলে কর্মশক্তির বেশি যোগান দেয়। ফ্যাট সল্যুবল ভিটামিন এ,ডি, ই এবং কে শোষণ করতে সাহায্য করে।
সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করা মোষের দুধ ইমিউনিটি শক্তি গড়ে তোলে। অন্যদিকে ভিটামিন এ, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম ভরা গরুর দুধও সাহায্য করে রোগ প্রতিরোধে।
গরু এবং মোষের দুধে থাকা প্রচুর পটাশিয়াম সাহায্য করে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে। সোডিয়ামের মাত্রা বজায় রেখে নিয়ন্ত্রণে রাখে ব্লাড প্রেশার।
ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হলেও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে মোষের দুধ বেশি কার্যকর গরুর দুধের তুলনায়। ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম থাকে বলে ত্বকের যত্নেও উপকারী গরু ও মোষের দুধ।
গরুর দুধের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। শরীরকে জলশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করে।
গরুর দুধের প্রোটিনের অংশ দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। ওজন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সহায়ক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ডেয়ারি প্রডাক্ট কমায় ওবেসিটি রিস্ক।
ল্যাক্টোজ কনটেন্ট বেশি হওয়ায় গরুর দুধের তুলনায় মোষের দুধ হজম করা কঠিন। মোষের দুধ বেশি দুষ্পাচ্য। তবে টোকোফেরল, রেটিনলের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকার কারণে মোষের দুধ ক্রনিক অসুখের আশঙ্কা কমায়।
কেউ কেউ গরুর দুধের মৃদু স্বাদ পছন্দ করেন। কারওর আবার পছন্দ মোষের দুধের ঘন ও ভারী স্বাদ। নির্দিষ্ট জনের শরীরের ধাঁচ এবং ধাত, ওজন, সুস্থতা, পছন্দসই স্বাদ এবং হজমের ক্ষমতা দেখে তবেই ডায়েটিশিয়ান ঠিক করে দেন তিনি গরুর দুধ না মোষের দুধ খাবেন।
নীরব ঘাতক বলে পরিচিত ব্লাড সুগার বা মধুমেহকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অহরহ কসরৎ করতে হয় রোগীদের৷ তাঁদের ব্যালান্সড ডায়েট বজায় রাখা খুবই জরুরি৷
কিছু খাবার ডায়েটে থাকলে প্রাকৃতিক ভাবেই ব্লাড সুগারের মাত্রা কম থাকে৷ কোন কোন খাবার খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকবে, সে সম্বন্ধে বলেছে পুষ্টিবিদ শীলা কৃষ্ণমূর্তি৷
নিয়মিত আমন্ড বা কাঠবাদাম খান৷ আমন্ডে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, ফাইবার৷ ফলে পেট দীর্ঘ ক্ষণ ভর্তি রাখে আমন্ড৷ বশে থাকে ওজনও৷ ব্লাড সুগারে আমন্ড খেতে ভুলবেন না৷
অল্প কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে খান সবুজ শাকবজি৷ পালংশাক, সজনেডাঁটা, মেথিশাকে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস আছে৷ এগুলিতে ক্যালরি কম৷ ফাইবার বেশি৷ ফলে ব্লাড সুগার বাড়তে পারে না৷
রাজমা, ছোলার ডাল, অড়হর ডাল, মুগডাল-সহ নানা ডালে প্রচুর ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলস আছে৷ এর অতিরিক্ত ফাইবার সাহায্য করে মধুমেহ কমাতে৷
নিয়মিত দারচিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকে৷ স্বাদের পাশাপাশি রান্নার গুণও বাড়িয়ে তোলে এই বহুল পরিচিত প্রাচীন মশলা৷
জলপাইয়ে আছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং ভিটামিন ই৷
থাইরয়েড গ্রন্থির সক্রিয়তা আমাদের সুস্থতার অন্যতম কারণ। এই গ্ল্যান্ড থেকে হরমোনের ঠিকমতো ক্ষরণ না হলে নানা উপসর্গ দেখা দেয়।
ওজন বেড়ে যাওয়া, ক্লান্তি, দুর্বল স্মৃতি, চুলের রুক্ষতা-সহ একাধিক উপসর্গ দেখা দেয় থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যায়। এই অসুখে কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বলছেন পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, হিমায়িত খাবার যেমন পট্যাটো চিপস, ওয়েফারে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। তাই এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে থাইরয়েডে।
ক্রুসিফেরাস শাকসবজি যেমন বাঁধাকপি, কেল, লেটুস, ব্রকোলি, ফুলকপি ডায়েটে রাখা যাবে না থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যায়। কারণ আয়োডিনের ভারসাম্য ব্যাহত হতে পারে। তাই এই সবজি খেলেও খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে।
সয়াবিন এবং সয়াবিনজাত খাবারে আইসোফ্ল্যাভোনেস যৌগ থাকে। এই যৌগের প্রভাবে বেড়ে যেতে পারে থাইরয়েড সমস্যা। তাই এই জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল।
গম, রাই, বার্লির মতো গ্লাটেনসমৃদ্ধ দানাশস্যও এড়িয়ে চলতে হবে থাইরয়েডে। কারণ এগুলির প্রভাবে থাইরয়েডের ওষুধের প্রভাব কমে যায়।
যে সব খাবারে প্রচুর ফ্যাট সেরকম মশলাদার খাবারও খাওয়া যাবে না থাইরয়েডে। এড়িয়ে যান ভাজাভুজিও।
বিনস, পাউরুটি, ডালের মতো কিছু খাবারে প্রচুর ফাইবার। অতিরিক্ত ফাইবার আছে এমন খাবার থাইরয়েড রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
অ্যালকোহল সেবন থাইরয়েডে অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই এই অসুখে সুস্থ থাকতে সুরাপান বন্ধ করতে হবে।
আঙুর শুকিয়ে তৈরি হয় কিশমিশ। জানেন কি আঙুরের তুলনায় কিশমিশ বেশি পুষ্টিকর। এতে ক্যালরি ও পুষ্টিমূল্য বেশি। আছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, ফাইবার ও অন্যান্য খনিজ।
কিশমিশ কীভাবে খেলে সেরা উপকার পাবেন, কীভাবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে এই শুকনো ফল খাবেন, সে বিষয়ে বলেছেন পুষ্টিবিদ মনপ্রীত কালরা।কিশমিশের ফাইবার এবং টার্টারিক অ্যাসিড হজমে সাহায্য করে। বদহজম সংক্রান্ত সমস্যা কমায়। নিয়ন্ত্রণ করে ইনফ্লেম্যাশন।
এক মুঠো কিশমিশ রাতভর ভিজিয়ে রাখুন এক গ্লাস জলে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পান করুন ওই জল।
কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের নানা সমস্যা দূর করে ভেজানো কিশমিশ। নিয়ন্ত্রণে থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য।
সকালে খালি পেটে ভেজানো কিশমিশ খেলে মেটাবলিজমের হার বেড়ে যায় অনেকটাই। ফলে কমে যায় বাড়তি ওজন। এর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট শরীর থেকে টক্সিন দূর করে।
ভেজানো কিশমিশের গুণ তলপেটে মেদ জমতে দেয় না। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে ক্ষতির আশঙ্কা না থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে দিন শুরু করুন ভেজানো কিশমিশে।