কোচবিহার: দীর্ঘ সময় ধরে কোচবিহারের শীতলপাটি প্রসিদ্ধ সর্বত্র। তীব্র গরমে এয়ার কন্ডিশনার, এয়ার কুলার কিংবা ফ্যান ছাড়াও মুহূর্তে স্বস্তি দিতে পারে এই শীতলপাটি। তবে কোচবিহারের শীতলপাটি এতদিন পাওয়া যেত জেলার গ্রামীণ হাট গুলিতে। তবে এবার এই পাটি পাওয়া যাবে সরকারি নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে। ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশনের অধীনে এই গোটা বিষয়টি বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলার ঐতিহ্যবাহী জিনিসের নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। সেখানেই কোচবিহারের শীতলপাটিকে স্থান দেওয়া হয়েছে। আর এই সুখবরে রীতিমত খুশির হাওয়া বইছে সকলের মধ্যে।
কোচবিহার জেলা গ্রাম উন্নয়ন সেলের আধিকারিক সৌমনা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘জেলার প্রসিদ্ধ শীতলপাটি এবার এক ক্লিকে মিলবে পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে। এজন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। অনলাইন মার্কেটিংয়ের এই যুগে হস্তশিল্পীদের সামগ্রী বাজারজাত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একশো দিনের মধ্যে সমস্তটা সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই প্রকল্পের নাম, ‘হান্ড্রেড ডেজ ইনিশিয়েটিভ ফর মার্কেটিং’ রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পে বিভিন্ন জেলার প্রসিদ্ধ ঐতিহ্যবাহী জিনিস অনলাইনে কেনা যাবে নির্দিষ্ট সরকারি অ্যাপের মাধ্যমে। সরকারি ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে কোচবিহারের ঐতিহ্য বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার।”
আরও পড়ুন: বলতে পারবেন, পৃথিবীর কোন প্রাণী ডিম ও দুধ দুটোই দেয়? অবাক হচ্ছেন! উত্তর জেনে কিন্তু আঁতকে উঠবেন
তিনি আরও জানান, “জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাটি শিল্পীদের থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রথমে শীতলপাটি কিনবেন। তারপর সেগুলির দাম ঠিক করে সরকারের অ্যাপে যাবতীয় তথ্য সহ আপলোড করা হবে। সেখান থেকে দেশ-বিদেশের যেকোনও প্রান্তের মানুষ কিনতে পারবেন এটি। তবে পুরোটা সুপারভাইজ করা হবে জেলার গ্রাম উন্নয়ন সেলের মাধ্যমে।”
জেলার কয়েকজন পাটি শিল্পী প্রতিমা দে, সুভাষিণী দে এবং ভবেশ চন্দ জানান, “এখন আনলাইনের যুগে সবকিছুই নাকি অনলাইনে পাওয়া যায়। তাই হাতে তৈরি পাটিও যদি এভাবে সবাই অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায় তবে ভাল হবে। তবে তাঁরা ঠিকঠাক দামও পাবেন।”
এভাবে কোচবিহার জেলায় তৈরি শীতলপাটি পৃথিবীর সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বে সহজেই। শিল্পীদেরও আয় হবে বেশি এবং শিল্পীরা ভালো দাম পাবেন সহজেই। তাই রাজ্য সরকারের এই নতুন উদ্যোগ দারুণ কার্যকর হবে বলেই মনে করছেন জেলার অধিকাংশ শীতলপাটি শিল্পীরা।
—- Sarthak Pandit