হাওড়া: পুজোর মুখে বন্ধ পরপর ২ টি জুটমিল! কাজ হারালেন কয়েক হাজার শ্রমিক, একদিকে বন্ধ হয়ে গেল হাওড়ার দাসনগরের ভারত জুট মিল, অন্যদিকে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক এর নোটিস ঝুলল হাওড়ার চেঙ্গাইলে ল্যাডলো জুট মিলে। পুজোর মরসুমেই হাওড়ায় পরপর বন্ধ ২ টো জুটমিল | আর তার জেরে বেকার হলেন কয়েক হাজার শ্রমিক |এই পুজোর মুখে কাজ হারিয়ে সকলেরই মাথায় আকাশ ভেঙে পরার মতে অবস্থা। পুজোর মুখে কী করবেন, রাতারাতি কোথায় পাবেন কাজ | কোথা থেকে রোজগার হবে,তা ভেবেই ভেঙে পরেছেন কর্মীরা।
আরও পড়ুন: সীমান্ত এলাকার ছাত্রীদের সুরক্ষিত রাখতে জেলা পুলিশের বিশেষ উদ্যোগ
পুজোর আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল হাওড়ার দাসনগর এলাকার ভারত জুটমিল। বৃহস্পতিবার সকালে কাজে গিয়ে জুটমিলের গেটে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেখতে পান শ্রমিকেরা। তারপরেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। শ্রমিকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নিতে চাইছিলেন কর্তৃপক্ষ। তার প্রতিবাদ করার জন্যই আলোচনা না করে জুটমিলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল।এদিন সকালে জুট মিলে কাজে যোগ দিতে এসে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিশ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। জুটমিলের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। জুটমিলের কর্মচারীদের অভিযোগ, তাঁত বিভাগের শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজ করানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
গত কয়েকদিন ধরে তাঁদের দুটোর বদলে চারটে মেশিন চালানোর জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্য শাসকদলের ইউনিয়ন এবং ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে। পালটা শ্রমিকরা জানিয়ে দেন, তাঁদের পক্ষে একসঙ্গে চারটি মেশিন চালানো অসম্ভব। বিষয়টি নিয়ে তারা ম্যানেজমেন্টের কাছে প্রতিবাদ জানায়। ফলস্বরূপ ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।কাজহারা শ্রমিকদের কথায়, ঠিক সময় বেতন হত না। মিলত না পিএফ-ও। সব আর্থিক সুবিধা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে।মিল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁত বিভাগের কর্মীদের বার বার বলা সত্ত্বেও উৎপাদনে নজর দেননি তাঁরা। ফলে অন্যান্য বিভাগের উৎপাদনও মার খেয়েছে। তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
হাওড়ার দাসনগরের পর এবার উলুবেড়িয়ার চেঙ্গাইল। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে শুক্রবার সকালে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’ বা কাজ বন্ধের নোটিস দিল চেঙ্গাইলের ল্যাডলো জুট মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে পুজোর আগে কর্মহীন হলেন মিলের ৭ হাজার শ্রমিক।সূত্রের খবর, পুজোর আগে বোনাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মিলের পরিবেশ। দুপুর ২ টোর সময় কাজে আসা শ্রমিকরা বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন মিলের একাধিক অফিস, কম্পিউটার, ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ।
পুলিশের হস্তক্ষেপে দীর্ঘক্ষণ পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তোলেন মিল মালিক কর্তৃপক্ষ।শুক্রবার সকালে মিলের বাইরের ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেওয়া হয়। এ দিন সকালে কাজে যোগ দিতে এসে এই নোটিস দেখে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, মাসখানেক আগে মিলের মালিকানা বদল হয়েছে। তারপর থেকেই কাজের চাপ বাড়ানো হয়েছিল। পাশাপাশি বোনাস নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন মিল কর্তৃপক্ষ।
রাকেশ মাইতি